- স্মৃ | তি | প | ট
- এপ্রিল ১৩, ২০২৩
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আর নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সমাধিস্থ দেহ।শেষকৃত্যে জনতার ঢল
ভেজাল ওষুধ রুখতে তাঁর সংস্কার আর গণ আন্দোলন টিকে থাকবে
বাংলাদেশের গণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও চিকিৎসা পরিষেবার সংস্কারক ডা.জাফরুল্লাহ চৌধুরী আর নেই। ১১ এপ্রিল রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। আজ দুপুরে তাঁর শেষ কৃত্য সম্পন্ন হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে মসজিদে, হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে। দীর্ঘদিন ধরে কিডনির অসুখে ভুগছিলেন ম্যাগসাসাই পুরস্কার প্রাপ্ত আন্তর্জাতিক খ্যাতি চিকিৎসক। চিকিৎসা পরিষেবায় তাঁর অবদান অসামান্য। গণ আন্দোলন গড়ে তুলে বিদেশ থেকে আমদানি-করা পুরনো ও জাল ওষুধের ব্যবহার রুখে দিয়েছিলেন তিনি। গড়ে তুলেছিলেন গণ স্বাস্থ্য আন্দোলন। রাজনীতিতে নিরপেক্ষ- তাঁর ভূমিকা। তবু, বিতরকের বাইরে থাকতে পারেননি। সুশীল সমাজের হয়ে নানারকম প্রশ্ন তুলেছেন প্রাতিষ্ঠানিকতার বিরুদ্ধে। তাঁর মৃত্যুতে শূন্যতা তৈরি হল বটে। কিন্তু প্রশ্নময়তা টিকে রইল।
জাফরুল্লাহর জন্ম ১৯৪১ সালে, চট্টগ্রামের রাওজানে। শৈশব কেটেছে কলকাতায়। দেশভাগের পর তাঁর পরিবার বাংলাদেশে চলে যায়। ওখানেই প্রাথমিক পড়াশোনা । পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে। এমবিবিএস পাশ করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পোস্ট ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে ফিরে আসেন। বরাবর বামপন্থায় বিশ্বাস করতেন। মুজিব হত্যার পর তদানীন্তন সরকারকে মেনে নিতে পারেননি। প্রেসিডেন্ট এরশাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক প্রশ্নাতীত নয়। ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ ড্রাগ পলিসি তৈরি করেন তিনি। এরপরই তাঁর সদর্থক ভূমিকা দেশে-বিদেশে আলোচ্য হয়ে ওঠে। জাল ওষুধের ব্যবসা রুখতে শুরু করেন গণ আন্দোলন। এতে দুই রকম সামাজিক উপকারের সূচনা হয়। বাংলাদেশে ওষুধ উৎপাদনের হার বেড়ে যায়, গড়ে ওঠে বড়ো বড়ো ওষুধ নির্মাতা সংস্থা। দ্বিতীয়ত, বিদেশ থেকে আগত মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অংশগ্রহণ নিয়ে কখনো আত্মগর্ব প্রচার করেননি । ৫২-এর ভাষা আন্দোলনের চেতনা আর স্বাধীনতা আন্দোলনের ভাবাবেগ ছিল তাঁর আমৃত্যু সঙ্গী। বাংলা ভাষা ও বাঙালি যতদিন টিকে থাকবে ততদিনই চিকিৎসাকর্মী জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্মৃতি স্মরণীয় হয়ে রইবে।
❤ Support Us