- এই মুহূর্তে দে । শ
- ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫
দলীয় বিধায়কদের চাপে নতিস্বীকার, পদত্যাগ করলেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং

একসময় দারুণ ফুটবল খেলতেন। খেলার সুবাদেই চাকরি পেয়েছিলেন বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সে। ১৯৮১ সালে বিএসএফ–কে ডুরান্ড কাপে চ্যাম্পিয়ন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নিয়েছিলেন। সন্তোষ ট্রফিতে মণিপুরের হয়ে প্রতিনিধিত্বও করেছিলেন। বিপক্ষ ফুটবলারকে ড্রিবল করার ব্যাপারে দারুণ ওস্তাদ ছিলেন। তিন–তিনবার মুখ্যমন্ত্রীর পদ হারানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। ড্রিবল করে ঠিক বেরিয়ে গিয়েছিলেন। এবার আর পারলেন না। আটকে গেলেন সতীর্থদের জালেই। পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং।
দলের ভেতরে রীতিমতো কোনঠাসা বীরেন সিং। মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে তাঁকে সরানোর জন্য আজ বিধানসভা অধিবেশনে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসতে চলেছিলেন বিজেপি বিধায়ক–মন্ত্রীরা। বিপদ আঁচ করেই কুর্সি বাঁচাতে রবিবার সাত–সকালেই দিল্লি পৌঁছে যান বীরেন সিং। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন। বৈঠকে অমিত শাহ বীরেন সিংকে পদত্যাগের কথা বলেন। তাতে প্রথম দিকে রাজি ছিলেন না বীরেন সিং। সন্ধেয় ইম্ফলে ফিরে উত্তর–পূর্বের দায়িত্বে থাকা ওড়িশার নেতা সম্বিত পাত্রকে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যপাল অজয়কুমার ভাল্লার হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেন। সেইসময় বীরেন সিংয়ের সঙ্গে ছিলেন মণিপুরের রাজ্য বিজেপি সভাপতি সারদা দেবী ও তাঁর গোষ্ঠীর কয়েকজন মন্ত্রী।
৬০ সদস্যের মণিপুর বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন বীরেন সিং। সেই কারণেই দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে ১৪ জনের বেশি বিধায়ককে নিয়ে যেতে পারেননি। বীরেনের সঙ্গে বিজেপি এবং নাগা পিপলস ফ্রন্টের ১৪ জন বিধায়ক ছিলেন। শনিবার নিজ সচিবালয়ে শাসক জোটের বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন বীরেন সিং। সেই বৈঠকেই তিনি বুঝে যান, বিধায়কদের বড় অংশ তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসবে। সেই অনাস্থা প্রস্তাবে বিজেপির আদিবাসী বিধায়কদের সঙ্গে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসও যোগ দেবে বলে মনে করা হচ্ছিল। বিজেপি–র ৩২ জন বিধায়কের মধ্যে ১৯ জন তাংর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখেছিলেন।
২০১৭ সালে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেন বীরেন সিং। ভারতের স্বাধীনতার পরবর্তী ইতিহাসে তাঁর সময়কালকে মণিপুরের অন্যতম রক্তক্ষয়ী সময় হিসেবে চিহ্নিত করতে শুরু করেছেন অনেকেই। দেড় বছরের বেশি সময় সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়, কুকিসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর সংঘর্ষে আড়াই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। গৃহহীন হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। সম্প্রতি একটা অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে। সেই অডিও ক্লিপে মণিপুর সংঘর্ষে তাঁর বিরুদ্ধে মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
❤ Support Us