- ভা | ই | রা | ল
- অক্টোবর ২৭, ২০২৫
সমুদ্র উপকূলে হাজার হাজার ‘ইউএফও’! আমেরিকায় হানা দিয়েছে ভিনগ্রহীরা ?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলরেখা জুড়ে আছড়ে পড়ছে রহস্যের নতুন ঢেউ। একের পর এক অদ্ভুত উজ্জ্বল বস্তু, কখনো আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে, কখনো হঠাৎ জলের বুকে ডুব দিচ্ছে জলতরঙ্গ না তুলেই ! বিজ্ঞানীমহল, সামরিক গোয়েন্দা থেকে সাধারণ মার্কিন নাগরিক, সবার আলোচনায় এখন একটাই আশঙ্কার নাম— ‘ইউএফও’।
এই অজ্ঞাত ‘জলতরঙ্গ যান’-এর খবর প্রথম প্রকাশ্যে আসে এনিগমা নামে এক জনপ্রিয় ইউএফও-ট্র্যাকিং অ্যাপের মাধ্যমে। নিজেদের ‘বিশ্বের বৃহত্তম অনুসন্ধানযোগ্য ইউএফও ডেটাবেস’ বলে দাবি করা এনিগমা জানিয়েছে, ২০২২ সালে চালুর পর থেকে তারা অন্তত ৩০ হাজার অজ্ঞাত আকাশ ও জল-ঘটনার তথ্য নথিভুক্ত করেছে। এর মধ্যে আশ্চর্যজনকভাবে প্রায় ৯ হাজার ঘটনাই ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলরেখা বা বড়ো জলাশয়ের ১০ মাইলের মধ্যে। আর অন্তত ৫০০টি ঘটনার কেন্দ্র ৫ মাইল ব্যাসার্ধে। এনিগমার সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ বলছে, এ বছর আগস্ট পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্যের মধ্যে ১৫০টিরও বেশি এমন বস্তুর দেখা মিলেছে, যেগুলি জলের ওপর ভেসে ছিল বা নিঃশব্দে জলে তলায় তলিয়ে যাচ্ছিল। মেরিন টেকনোলজি নিউজ সূত্রে জানা যাচ্ছে, একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, বস্তুগুলির আলো কখনো নেভেনি, জলে নামবার সময় কোনো শব্দ বা ঢেউও তোলে না ওগুলো, যেন প্রকৃতির নিয়ম অগ্রাহ্য করেই ভিনগ্রহীরা নিজেদের জরিপের কাজ চালাচ্ছে।
এমন রহস্যময় দৃশ্য সবচেয়ে বেশি ধরা পড়েছে ক্যালিফোর্নিয়া ও ফ্লোরিডার উপকূলে। ৩৮৯ ও ৩০৬টি রিপোর্ট নথিভুক্ত হয়েছে। এক প্রত্যক্ষদর্শীর তোলা ভিডিওতে দেখা যায়, সাগরের তলদেশে সবুজাভ আলোর রেখা সাপের মতো নড়ছে, তারপর মিলিয়ে যাচ্ছে গভীর অন্ধকারে। এনিগমা প্রকাশিত মানচিত্রে দেখা যাচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূল সারি সারি অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু বা ‘ইউএফও’।
তবে এই আলো-রহস্যে অন্য মাত্রা যোগ করেছেন মার্কিন নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা টিম গ্যালাউডেট। তাঁর দাবি, ‘অজানা, ব্যাখ্যাতীত বৈশিষ্ট্যের বস্তুগুলি মার্কিন জলসীমায় ঢুকে পড়ছে। কিন্তু প্রতিরক্ষা দপ্তর সতর্কতা জারি করছে না, এটি চিন্তার বিষয়।’ সোল ফাউন্ডেশন-এর এক বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদনে তিনি লিখেছেন, ‘এমন বস্তু যদি সত্যিই থাকে, যা নির্বিঘ্নে আকাশ থেকে জলে ঢুকে যেতে পারে, তাও কোনো তরঙ্গ তোলা ছাড়া, তবে তা কেবল প্রযুক্তিগত নয়, সভ্যতার জন্যই ‘বিশ্ব-বদলে দেওয়া’ আবিষ্কার হতে পারে।’
যদিও আমেরিকায় এমন উত্তেজনা কিন্তু নতুন নয়। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস ওমাহা সান দিয়েগোর উপকূলে একটি অজ্ঞাত বস্তুকে দেখতে পাওয়ার দাবি করেছিল, পরে ‘পেন্টাগন’ সেই ভিডিওটি সত্য বলে স্বীকার করে। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি আলোকোজ্জ্বল বস্তু সমুদ্রের ঢেউ চিরে সমুদ্র গভীরে প্রবেশ করছে, কিন্তু জলে কোনো তরঙ্গ উঠছে না। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, এগুলি হয়তো উন্নত ড্রোন প্রযুক্তির পরীক্ষা, আবার অনেকে বলছেন, আমাদের কল্পনার বাইরের কোনো শক্তি তাদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। এ ঘটনায় সে ইঙ্গিতও এতে লুকিয়ে থাকতে পারে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর যদিও এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। তবে উপকূলের বাসিন্দারা এখন রাতের আকাশ আর সমুদ্রের গর্জনের দিকে তাকিয়ে ভাবছেন— মানুষের চোখের আড়ালে কি সত্যিই চলছে অন্য এক জগতের রহস্যময় যাতায়াত?
❤ Support Us








