- প্রচ্ছদ রচনা স | হ | জ | পা | ঠ
- জানুয়ারি ২, ২০২৫
টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের যুগান্তকারী আবিষ্কার, কোয়ান্টাম পরীক্ষায় মিলল ‘নেগেটিভ সময়’-এর অস্তিত্ব

কোয়ান্টাম পরীক্ষায় বিজ্ঞানীদের অবিশ্বাস্য ফলাফল – ‘নেগেটিভ সময়’ এর অস্তিত্ব মিলল ফোটন কণায়। সাম্প্রতিক গবেষণায় ‘নেগেটিভ টাইম’ বা নেতিবাচক সময়ের অস্তিত্ব খুঁজে পেলেন তাঁরা। প্রিপ্রিন্ট সার্ভার arXiv – এ গবেষকদের পোস্ট নিয়ে বিশ্বব্যাপি হৈ চৈ। কী এই ‘নেগেটিভ টাইম’?
টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা যুগন্তকারী আবিষ্কার করেছেন। ‘নেতিবাচক সময়’ যে শুধুমাত্র তাত্ত্বিক ধারণা নয় বরং বাস্তব এই পরীক্ষায় সে প্রমাণ মিলেছে। আলোর কণা অর্থাৎ ফোটনের আচরণ নিয়ে সাত বছর গবেষণা করার পর রোমাঞ্চকর বিষয়টি উদ্ঘাটন করেছেন বিজ্ঞানীরা। কোয়ান্টাম পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁরা দেখিয়েছেন, আলো প্রবেশ করার আগে একটি উত্তেজিত ফোটন কণা নেতিবাচক সময় কাটাতে পারে, যা প্রকৃতি সম্পর্কে আমাদের প্রচলিত ধারণা বদলে দিতে পারে। এই পরীক্ষা আন্তর্জাতিক মানের হলেও, বিশ্বের বিজ্ঞানীমহল এখনো একটিকে সন্দেহের চোখেই দেখছে। পরীক্ষার ফলাফল যদিও এখনো কোনো শীর্ষ বিজ্ঞান জার্নালে এখনো প্রকাশ হয়নি, আশা করা হচ্ছে যে সময় এবং কোয়ান্টাম মেকানিক্সের রহস্যগুলি নিয়ে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন টরেন্টোর বিজ্ঞানীরা।
কোয়ান্টাম পদার্থবিদদের গবেষণার প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল, ‘অ্যাটমিক এক্সাইটেশন’ নামে পরিচিত ঘটনাটি আরও ভালোভাবে বোঝা। এটি এমন এক পরিস্থিতি, যেখানে কোনো উপাদান দ্বারা শোষিত ফোটন ‘টাইম ডিলে’ বা সময় বিলম্বের মতো অভিজ্ঞতার মুখে পড়ে, যা ‘গ্রুপ ডিলে’ নামেও পরিচিত। আর উপাদানটি থেকে কণাগুলো বেরিয়ে যাওয়ার আগে পরমাণুর সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার কারণে এমনটি ঘটে থাকে।
নতুন এই গবেষণার বিষয়ে X- হ্যান্ডেলের একটি পোস্টে টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন পদার্থবিদ এফ্রাইম স্টেইনবার্গ লিখেছেন, ”সাধারণত ফোটন কণা ধনাত্মক সময় নিলেও আমাদের পরীক্ষায় দেখা গেছে, উত্তেজিত অবস্থায় থাকার সময় বিভিন্ন ফোটন পরমাণুর মধ্যে ‘ঋণাত্মক’ সময়ও কাটাতে পারে…”
Woo-hoo!
It took a positive amount of time,
but our experiment observing that photons can make atoms seem to spend a negative amount of time in the excited state is up!It sounds crazy, I know, but check it out!
Kudos to Daniela +the rest of the team!https://t.co/rHrAUJq5rX pic.twitter.com/Lz7Lazb1Gs— Aephraim Steinberg (@QuantumAephraim) September 6, 2024
প্রক্রিয়াটি আরও ভালোভাবে বুঝতে গবেষকরা এমন এক পরীক্ষা করেছেন, যেখানে অতি শীতল পরমাণুর মেঘের মধ্য দিয়ে ফোটন কণা নিক্ষেপ করা হয়। এর লক্ষ্য ছিল, ‘অ্যাটমিক এক্সাইটেশন’র ঘটনাটি খতিয়ে দেখা। পরীক্ষায় পরমাণুর মধ্য দিয়ে যাওয়া কিছু কিছু ফোটন কণার প্রবাহ ‘অ্যাটমিক এক্সাইটেশন’ শেষ হবার আগেই সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল, যার ফলে সময়ের একটি ঋণাত্মক মান উঠে এসেছে।
“এর ফলাফলে ইঙ্গিত মেলে, গ্রুপ ডিলে’র মতো ঘটনার ক্ষেত্রে সময়ের বিভিন্ন ঋণাত্মক মানের গুরুত্ব অনেক বেশি,” গবেষণাপত্রে উল্লেখ করেন গবেষকরা। গবেষণার বিস্তারিত উঠে এসেছে ‘এক্সপেরিমেন্টাল এভিডেন্স দ্যাট এ ফোটন ক্যান স্পেন্ড এ নেগেটিভ অ্যামাউন্ট অফ টাইম ইন অ্যান অ্যাটম ক্লাউড’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে, যা এখন পিয়ার রিভিউয়ের অপেক্ষায় আছে।
‘সায়েন্টিফিক আমেরিকান’ – এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে কোয়ান্টামের এই পরীক্ষা শুরু করেছিলেন স্টেইনবার্গ এবং তাঁর সহকর্মী, তৎকালীন ডক্টরাল ছাত্র জোসিয়াহ সিনক্লেয়ার।
আলো এবং পদার্থের মিথস্ক্রিয়ার পরীক্ষায় আগ্রহী ছিলেন তাঁরা, বিশেষত পারমাণবিক উত্তেজনার ঘটনা: যখন ফোটনগুলি একটি মাধ্যমের মধ্য দিয়ে যায় এবং শোষিত হয়, তখন সেই মাধ্যমের পরমাণুর চারপাশে ঘোরাফেরা করা ইলেকট্রনগুলি উচ্চতর দিকে যায়। শক্তির মাত্রা যখন এই উত্তেজিত ইলেক্ট্রনগুলিকে তাদের আসল অবস্থায় নিয়ে আসে, তখন তারা সেই শোষিত শক্তিকে ‘রিমিটেড ফোটন’ হিসাবে ছেড়ে দেয়। যা আলোর ‘ট্রানজিট’ সময়ের মধ্যে একটি ‘বিলম্বিত সময়’ তৈরি করে।
মার্কিন সাময়িকী ‘সায়েন্টিফিক আমেরিকান’কে ইউনিভার্সিটি অফ টরন্টো’র গবেষক জোসিয়াহ সিনক্লেয়ার বলেছেন, “এর ফলাফল দেখে তার গবেষণা দলটি ‘একেবারে বিস্মিত’ হয়েছিল।”
❤ Support Us