- ধা | রা | বা | হি | ক রোব-e-বর্ণ
- ডিসেম্বর ৩, ২০২৩
মাটি ব্রতের আখ্যান । তৃতীয় পর্ব
বল্লভ প্যাটেল চরমপত্র দিয়েছেন, বাহাত্তর ঘন্টার মধ্যে হিন্দু নেধন বন্ধ না করলে তিনি মেলিটারি পাঠায়ে পাকিস্তান দখল করে নেবেন। মুসলমানদের তাড়িয়ে দেবেন আরব দেশে। নেজামের কপালটা যেন মনে রাখে পাকিস্তান।.....তারপর
অলঙ্করণ: দেব সরকার
ধা রা বা হি ক · উ প ন্যা স
॥ আন্ধার পরব ॥
জয়েন উদ্দিন বেঁধেছেন চন্দ্রমোহনকে— আচজ্জি, এ কী করতিচং ভাই । পাগল হয়ি গেলা নাকি একদমে। মাথাখান ঠান্ডা করো। ভাবীজানের কথা একবার ভাবো দেখি।
চন্দ্রমোহন জবাব ফেরালেন না, তার চোখ এখন উদাস উড়ে যাচ্ছে। এখন দাঁড়িয়ে আছেন স্থির, যেন কোনো উত্তেজনা নেই। পাহাড়ের মতো দেখতে লাগছে তাঁকে, চলনহীন চোখের সাদা ধকধক করছে। কালো চোখের তারা দুটি তেমনই আছে। তবু জয়েনউদ্দিনের মনে হলো, সে মণিজোড়ায় প্রাণ নেই।
ভিতরে ঢুকে গেছেন কুলসুম, বসেছেন হেমশমীর পাশে, দু সখীর চোখ ভেঙে অঝোর বর্ষা নেমে যাচ্ছে। কারও মনে কথা নেই, যেন মুখ জানে কথা আনতে নেই।
এ গ্রামে একবাড়ি থেকে আর একরাড়ি কাঠা কয়েকের ফাঁক। আঁধার চারিদিক, এবং ওরা সকলে ঘরের ভিতরে, এবং আওয়াজ পৌঁছয় না দূর ঠেলে, তাই এ ঘরের কেউই জানতে পারছে না, পুবে, পুকুরের ওপারে ইসমাইল শেখ ও তার বিবি ঘাটে এসে চলিতাগাছের তলায় দাঁড়ি আছে। গানে হাত, আঁধার গিলে রেখেছে তাদের চোখের, মুখের ভায়, কেউ বুঝতে পারবে না। পাখিদের ঘরে ফেরার ডাকও বন্ধ হয়ে গেছে অনেকক্ষণ।
পুলিশের জিপ, বোধহয়, টহলে বেরিয়েছে। দূর থেকে লাউড স্পিকারে ভেসে আসছে কথা— কারফু জারি আছে। গিরামবাসীরা, ঘর হইতে যেই বেরাবেন না। গোলি করার হোফোম দেওয়া হইয়াছে। শান্তি বজায় রাখিতে সাহায্য করেন। খুদা হাফিজ।
অনেকগুলি রাহাইয়া কুকুর। মনে হয়, জিপের পিছন পিছন ধাওয়া করেছে, … ঘেউ, ঘেউ, ঘেউই…। মনে হচ্ছে ভেরী বেজে উঠলো চারিদিকে।
চন্দ্রমোহন কয়েক মুহূর্তের জন্য সত্যিই উন্মাদ হয়েছিলেন।
ইসমাইলের ছেলে বাচ্চু হাঁফাতে হাঁফাতে হুরুমুড় করে যে কথাগুলি তার জেটা, হেমশশীর কাছে উপরে দিয়েছিলো, তার টুকরোটুকুই শুনতে পেয়েছিলেন চন্দ্ৰমোহন। বাকিটুকু নির্ামাণ করে নিতে তর সময় লাগলো না। জীবনে এমন ঘটনা ঘটেনি যেখানে তিনি আগুপিছু চিন্তা করেননি। সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাৎক্ষনিক, অবিবেচকের মতো। ছাত্রদের বারবার শিক্ষা দিয়েছেন যে তাড় যেন কখনও এমন হঠকারী কাম না করে। কিন্তু এবারে সেটাই ঘটলো। চিৎকার করে ডাকলেন— নীলুর মা!
সাধনকে নিয়ে হেমশশী ততক্ষণে সদর দরজার ভিতর কড়ায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন, ডাকে শশব্যস্ত হয়ে চন্দ্রমোহনের কামরার দিকে এগোতে গিয়েই থমকে দাঁড়াতে হলো।
চন্দ্রমোহন দাঁড়িয়ে আছেন ভিতরের বারান্দায়। এ কী চেহারা তাঁর! ভয় জাগে হেমশশীর। এ মানুষটার এমনতরো রূপ এত লম্বা আয়ু ক্ষয় করা জীবনে কখনো দেখেননি। কেমন উদভ্রান্ত মনে হয় তাকে, উস্কোখুস্কো চুল, মনে হচ্ছে মাথা আঁকড়ে সামান্য যে কটি চুল এখনও শোভা দেয়, সেগুলিক ছিঁড়ে ফেলতে আলুখালু চেষ্টা করেও না পারার হারের কষ্টে বিপর্যস্ত। যেন লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছেন অচেনা সমুদ্র থেকে হঠাৎ ধেয়ে আসা রাক্ষসী ঘূর্ণিবাত্যার লেজের ঝাপটানিতে। নিষ্ঠুরের মতো, হিংস্র গুহামানবের মতো আগুন বর্ষাছে তাঁর শরীর।
স্মৃতিগুলো এখন খসে পড়া উন্ডার রাশি, দাহিকাতেজ নিয়ে ঝরছে তার মাথায় শরীরে, ছ্যাঁকা দিচ্ছে তাঁকে, পুড়ে যাচ্ছে চামরা, টসটসে বিষ তরলে ভর্তি ফোস্কা উঠছে ফুলে। জয়েন উদ্দিন কি নিজেকে লোহার শিকলি চাবুক মেরে চলেছেন অনর্গল। এ কোন কারবালার মরু-পথে তাঁর যাত্রাপথ
— হেম, তোমার আমার কয়খান কাপড়চোপর গুছায়ে নাও। গয়নাগুলা গুটাকয়েক গায়ে পড়ো, কয়েকখান কমরে গুজাও। বাকিগুলাল দায়নের বিবির কাছে জিম্মা রাখো।
হেমশশী চেয়ে আছেন নেই-শব্দের নিথরতায়, শোনা শব্দগুলোর কোনো অর্থ তার বুদ্ধির তারে বাজছে না।
— আমার ঘরে আলমারিতেই বাড়ির দলিলটে কুথায় রাখিচো? খুঁজি পালাম না। ওটারে বায়ের করি জয়েনের দাও। চিড়ে মুড়ি কিছু নিবার পারো, পথে লাগতি পারে।
হেমশশী এখনও অবাধ, শুধুই শুন যাচ্ছেন, বিশ্বাস হচ্ছে না রতিপরিমান।
— নোগদ যুদি থাকে দুইজনে ভাগ করি নেবানে। আর হ্যাঁ, আমার ডাক্তারি বইখান নেতে ভোনলবা না। যাও পোলিন্দাপোটলি সাধনেরে বাঁধি দিতে কত্ত। তুমি শড়ি বদলায়ে চনি আসো। আমি তোয়ের হতিছি।
এতক্ষণ পর হেসশশীর কথা মুখ থেকে ঝরতে সময় পায়, – ইসব কচ্ছেন কেন?
চন্দ্রমোহন নিজের কামরায় ঢুকতে যাচ্ছিলেন। ফিরলেন স্ত্রীর মুখে, মুখের রেখাগুলি কঠিন দাগে জেগে উঠছে– কথা কবা না। সোমায় নাই।
— ঠিক আছে–হেমশশীর যেন তৌতলামি আসে, -কিন্তুক, পোটলাপোটলি নিয়ি কুথায় যাবো?
— দেশ ছাড়ি যাতি হবে। ইখানে থাকলি তোমারি বাঁচাতি পারবানে না। উয়েরা জয়নালের মারিচে। চ্যারম্যান ইনফ্লুয়েনশিয়ান লোক ছিলো, তাও মরতি হলো। গুণ্ডেগণের পিছনের লোকেরা চ্যারমেনের চেয়াও পাওয়ারফুল পারসনস। বুঝতি পারলা? তোমারে আমারে ছাড়পুকা পিঁপড়ের মতো টিপি মাইরবে। আমি যদি আগে মরতাম, তয় কথা ছেলো না।
অমঙ্গল তুকে হেমশশী ডুকরে উঠলেন। মুখে আঁচল চাপা দিতে হলো – ছি ছি! কী কথা যে কন আপনে!
কাঁদন বন্ধ করো। — সুগম্ভীর নির্দেশ জারি হলো।
সাধনের গাঁটার বাঁধা শেষ। নিজের জন্যও একটা বেঁধেছে।
হেমশশী লক্ষ্য করে চোখের জল আটকাতে পরলেন না— একী! সাধন বাপ! তুই এমুন…
—আমি তুমাগের সাথি যাবো।
— ক্যানে রে? এ কী বলতিছিস? আমরা কুথায় থাকবো ঠিক নাই, কেমুনে থাকবো জানি নে। তোরে নিয়ে কুথায় রাখবো ক।
চন্দ্রমোহন বোঝাতে বসেন।—সাধন, বুঝতি পারতিছিস না, বাবা। পথে, রাস্তায় বেপদ থাবা মারি বসি রইচে। সোঁদরবনের বাঘও এমন বসে না। যখন তখন মিত্যু। তোর খুড়ে খুড়ি, খুড়েতু ভাইবুনেরা গ্রামেই তো রইচে। কিছু ট্যাকা পয়সা দিয়ি বাই, তাগের কাছে গিরি থাক। ব্যাশকম হলি জয়েনের আসি করি। মুছিবত সমলায়ে দেবে।
জীবনে বোধহয় প্রথম সাধন তার মালিকের কথার উত্তরে মাথা নাড়লো— আমার কেও নাই। তুমরা ছাড়া। তো মিত্যু যদি মাত্তি আসে, আগে আমারে মারবে। তারপর…। ভুলি য্যাও না, খুড়িমা, আমি চাড়াল।
জয়েন উদ্দিন তখন বুক থাবড়াচ্ছেন। মনে হচ্ছে ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেন দু ভাইয়ের তাজিয়া নিয়ে জুলুম বেরিয়েছে। তিনি মিছিলদার।
— আমার দেলটা ভঙ্গি দেলে, আচাজ্জি, ভাঙ্গি দেলে।
কান্নাদরিয়ার অর্থই পাণিতে তিনি যেন দিশেহারা। চন্দ্রমোহনের সঙ্গে যে তার আজন্ম বন্ধন। ফুলে ফুলে উঠছে অশ্রুর ঢেউ, একটার পর একটা ছবি ফেণার কুচি হচ্ছে, ছবি হয়ে, আছড়ে পড়ছে ফোন আসা দিনের মাটির তটে। কত যে তার বর্ণচ্ছটা।
বাইরে রোয়াকের মতো পাকা মেঝের বারান্দা। তখন ওখানে বৈঠকখানা ঘরটা তোলা হয়নি। বিরাজমোহন পণ্ডিত মশাই মাদুর ঢালা পেতেছেন, মাঝে পিতলের হ্যারিকেন, কী আশ্চর্য আলো। বসেছেন সোজা শিরদাঁড়ায়, তাঁকে ঘিরে তিন বালক – চাঁদ, বিশু, আর জৈনু; সামনে খোলাবই, দোয়াত কালি কলম, হাত সেলাই খাতা। মনে পড়ছে পন্ডিতমশাইয়ের মুদ্রাদোষ, বারবার পইতে পাক দিয়ে ওঠাচ্ছেন, নামাচ্ছেন।
মনে পড়ছে, একবার জৈনুকে বলছেন— মন দিয়ে লেখাপড়াখান শিখ, বাপ। শক্ত মানুষ হয়ি দাঁড়া। নালি যে বাসুন কাইতের গিন্না, পায়ের নাথি খায়ি যাতি হবে অনন্তকাল। — আরো বলেছিলেন, —তোয়েগের বাপ পরদাদারা যাগেরে, বেহারীগুলারে, উত্তরিয়াগুলেরে, হেন্দার সাকার দ্যাবতা শিয়ানে ফুল বেলপাতা দিয়ি নৈবেদ্য সাজাতেছে, উয়েরা কেউ তোয়েগের মোচলমান ভাবে না রে, কয় তুরা নাকি আতরাফ। শরিফ না। হেন্দো উঁচুজাতের চোখে চাড়াল নমশূদ্দুরেরা যেমন অদ্ভুত, আশরাফশুলের চোখে তুমেরাও তাই। এই অপমান বুকি বাঁধি, দাঁত দিয়ি ঠোটখান কামড়ি ধরি, কঠিন পায়ে মাটির উপর খাড়তে লাগবি রে, বাপ জৈনু।
মনে পড়ে, বিশু লায়েক হলো, রেল কোমপানির কাজে ঢুকলো, স্টেশন মাসটার, চলে গেলো নদিয়ার কুষ্ঠিয়া সাবডিভিশনের দর্শনীয় বিয়ে হলো তার। দর্শনার রেলের কোয়ার্টারে থাকতো। এখন নাকি ওখানেই নিজের আস্তানা বানিয়েছে। মুক্তোকান্দির সঙ্গে টান আস্তে আস্তে ঢিলে হয়ে গেছে। কখনো কখনো শখ হলে, কী উৎসবে পরবে, বউ- ছেলে-মেয়ে নিয়ে আসে, দুদিন তিনদিন থাকে। তীর্থযাত্রীর মতো। ভ্রমণার্থীর মতো।
মনে পড়ে যাচ্ছে, গভর্নমেন্ট চন্দ্রমোহনকে একবার প্রস্তাব দিয়েছিলো। ওরা তাঁকে খুলনা ডিভিশনের স্কুলগুলির জন্য স্পেশান ইনসপেকটর পদে নিয়োগ করতে চায়। মাসটারির তুলনায় বেতনের আকার বড়ো। পদের মর্যাদাও। চন্দ্রমোহন রাজি হলেন না।
আসলে, মুক্তোকান্দির এই নরম ভূমিনাভিতে নাড়ীর বাঁধনটা কিছুতেই কাটতে পারেননি তিনি। অন্যদিকে জয়েন উদ্দিন ছিলো তার হাতে রাখির সুতো। নলিনবিহারী উচ্চ ইংরাজি বিদ্যালয় ছিলো দুজনেরই খোয়াব। কতবার যে স্কুলের সমস্যায় নাকানি চোবানি খেতে হয়েছে। ভয়ে হাল ছাড়তে চেয়েছেন জয়েন উদ্দিন। চন্দ্রমোহন বলতেন,- ম্যাঘ হয়… ঝড় ওঠে… কাটি যায়। যাবে। চলো। সোমায় অপায় না করি, কামটা আগে ঠিক করতে লাগবে।
দুবন্ধুর মধ্যে প্রায়ই একরকমের কথা হতো। একদিন আগে পরে মাসটারিত যোগ। রিটায়ার। এন্তেকালও যদি বিধেতাপুরুষ এই নিয়মে চালান -ভালো হয়। একজন চিতায় যাবে, অন্যজন শোবে করবে।
মনে পড়ে যাচ্ছে, স্কুলের কথা। আড়ালে ছাত্রদের বসালো মন্তব্য – ওই দেখ, মওলানা চন্দার মোহন খান আসতিছে, পলা, কিংবা-উদিক পানে চা, পন্ডিত জৈন উদিনাচার্য দন্ডায়মান, ধরা পড়লিই কানখান যাবে। – তখন এ সব টীকাভাষ্য নিয়ে দুবন্ধুতে হাসাহাসি হতো। আজ কিছুতেই হাসি এলো না। আজ শুধু মনে পড়া… আর মনে পড়া।
স্মৃতিগুলো এখন খসে পড়া উন্ডার রাশি, দাহিকাতেজ নিয়ে ঝরছে তার মাথায় শরীরে, ছ্যাঁকা দিচ্ছে তাঁকে, পুড়ে যাচ্ছে চামরা, টসটসে বিষ তরলে ভর্তি ফোস্কা উঠছে ফুলে। জয়েন উদ্দিন কি নিজেকে লোহার শিকলি চাবুক মেরে চলেছেন অনর্গল। এ কোন কারবালার মরু-পথে তাঁর যাত্রাপথ! সারা গা ফেটে ফেটে লোহুস্রোত গড়িয়ে যাচ্ছে যেন। প্রিয় ভ্রাতৃশোকে হাহাকার করে উঠছেন তিনি। – হায় হায় হায় হায়…।
এতক্ষণ ধরে একরাম পিতা পিতৃব্যের দশা প্রত্যক্ষ করে বিড়ম্বিত বোধ করছিলো। এবারে বলতে পারলো,– জেটা! জেটি! আব্বু আম্মির কথাই তোমরা শোনতেছো না, সিখানে আমার কত্তনের কী খ্যামতা? আমি যাই। এট্টু বেবুস্থা করতি পারি কিনা দেখি। এট্টা কথা, আমি না ফেরাতক বেরাবা না। তালি গলায় দড়ি ফাঁসে মরবো, কয়ে রাখলাম।
—কী কতিছিস, বাপ, তুই। বলাই ষাট! – হেমশমীর কান্নায় আর কিছু শব্দ আসে না।
একরাম কিছু না শুনে দৌড়ে বেরিয়ে যায়।
এদিকে জয়েন উদ্দিন যেন চিতা অভিসারী আত্মজনের দেহখানা বুকে চেপে গোঙাচ্ছেন, – আমারে শেষবারের মতো কতি দাও। আমার কথাখান শোনো ভাই, একবারের তরে শোনো।
চন্দ্রমোহন ঘর থেকেই যেন বহুদূরে চোখ মেলে ছিলেন। বললেন ধীরে ধীরে, – মানাষব, মাথার ঘিলুতে পাগেলা কুত্তের কামড়িছে। বুজিচৈতন্যের জলাতঙ্ক রোশ ধরিছে, জয়েন। এ জাতি বাঁচবে না। হিন্দু মরবে। মোচলমানও নিকেশ হবে। পড়ি থাকবে শ্মশান আর গোরস্থান। পলক না ফালায়ে চেয়া থাকবে জঙ্গল, শিয়েল, কুত্তে, শকুন। ভোজের উল্লাস শুরু হয়ি গিচে।
ক্রমশ…
আগের পর্ব পড়ুন: পর্ব ২
❤ Support Us