- প্রচ্ছদ রচনা
- এপ্রিল ৭, ২০২২
পাকিস্তানের রাজনীতির অস্থিরতা তুঙ্গে, সুপ্রিম কোর্টে জরুরি ভিত্তিতে শুনানি শুরু ।

আজ বৃহস্পতিবার থেকে ইমরান মামলার শুনানি শুরু হল পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে। ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীদের পেশ করা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ এবং তারপর ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেওয়া, এই গোটা প্রক্রিয়াটিই এবার আতস কাচের তলায় যাচাই করে দেখবে পাকিস্তানের শীর্ষ আদালত । আজ থেকেই জরুরি ভিত্তিতে এই মামলার শুনানি শুরু হল সুপ্রিম কোর্টে।
সম্প্রতি ইমরানের বিরুদ্ধে পাক পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে অনাস্থা পেশ করা হয়। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল বলছে, এই প্রক্রিয়া শুরু হলে ইমরানের পরাজয় নিশ্চিত ছিল। কিন্তু, তার আগেই এই প্রস্তাবকে বেআইনি বলে খারিজ করে দেন ন্যাশনাল অ্যাসম্বলির ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি । পরে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিকেই ভেঙে দেন।
এর জেরে বিরোধীদের হাত থেকে ইমরানকে গদিচ্যুত করার ক্ষমতা চলে যায় । যদিও পরে প্রেসিডেন্টই আবার ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি থেকে সরিয়ে দেন। এই গোটা ঘটনাক্রমকে বেআইনি এবং ক্ষমতার অপপ্রয়োগ বলে দাবি করেছেন বিরোধীরা । সুবিচার চেয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। তার জেরেই এদিন থেকে শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া ।
মামলাটির শুনানি চলছে পাঁচ সদস্যের বিশেষ বেঞ্চে। যার নেতৃত্বে রয়েছেন পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়াল । বুধবার বিচারপতিরা বাবর আওয়ানের কাছে ইমরানের তোলা বিদেশি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে চান। ফলে সামগ্রিকভাবে শুনানি প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়।
এদিকে, এই মামলা নিয়ে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের উপরেও চাপ বাড়ছে। মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করে রায় ঘোষণা করার চাপ রয়েছে আদালতের উপর। কীসের ভিত্তিতে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ডেপুটি স্পিকার ইমরানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা খারিজ করে দিলেন, কেন প্রেসিডেন্ট প্রথম ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দিলেন এবং পরে ইমরান খানকে সরিয়ে দিলেন এবং সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, ইমরান কেন বিদেশি ষডযন্ত্রের তত্ত্ব খাড়া করলেন, এসবই আদালতকে বিস্তারিতভাবে জানাতে হবে। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, এই গোটা প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত জটিল। তাই চাপ থাকলেও আদালতের পক্ষে দ্রুত রায় ঘোষণা যথেষ্ট কঠিন চ্যালেঞ্জ ।
অন্যদিকে, ডেপুটি স্পিকারের আইনজীবী নিম বোখারি এবং অ্যাটর্নি জেনারেল খালেদ জাভেদ খান ইমরান খান সরকারের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন আদালতে। বৃহস্পতিবার তাঁরাই সরকারের অবস্থান আদালতের সামনে স্পষ্ট করবেন ।পার্লামেন্টে আস্থা ভোট এড়িয়ে মুখ রক্ষা করতে পেরেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কিন্তু নিজ তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতাদের বিস্ফোরক সব দাবিতে ক্রমেই চাপে পড়ছেন তিনি । এর মধ্যেই দলটির সাংসদ আমির লিয়াকতের মন্তব্যে নতুন সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও সেনা প্রধান জেনারেল কামার জাবেদ বাজওয়া।
আমির লিয়াকতের দাবি, পাকিস্তানের সেনা প্রধান জেনারেল কামার জাবেদ বাজওয়াকে সরাতে চেয়েছিলেন ইমরান খান। এমনকি তার বিরুদ্ধে বাহিনীর মধ্যে বিদ্রোহ ঘটাতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।ইমরান খানকে বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দিয়ে আমির বলেছেন, ‘আপনি জেনারেল বাজওয়াকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এর সাক্ষ্য আমি দিচ্ছি। আপনি আমাকে ডেকে বলেছিলেন যে, আমি জেনারেল বাজওয়াকে সরিয়ে দিতে যাচ্ছি। আরও অনেক কথা আছে যা বলব, সব ধ্বংস হয়ে গেলেও আমি আপনার মতো টিভিতে এসে গোপন কথা খুলে দেব না । আপনি সেনাবাহিনীতে বিদ্রোহ ঘটাতে চেয়েছেন । আপনি একজন কমান্ডার এনে সেনাপ্রধানকে অপসারণ করতে চেয়েছিলেন । পারলে সরিয়ে দেখান । আপনার বাবাও সরাতে পারবে না । চেষ্টা করে দেখুন।’
পাকিস্তানের গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে অনুযায়ী, ইমরান খান পেশোয়ারের বর্তমান কর্পস কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফৈজ হামিদের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করছিলেন। ফৈজ হামিদকে নিয়ে ইমরান এবং কামার জাভেদ বাজওয়ার মধ্যে বিবাদের খবর কয়েক মাস ধরেই শোনা যাচ্ছিল ।
❤ Support Us