- গল্প
- মে ৩, ২০২২
আকাশ অংশত মেঘলা থাকবে
মা বোঝে, বিপদের পূর্বাভাস। অতীত তার মধ্যে ঠেসে দিয়েছে ভয় : ঘর হারানোর, দোর হারানোর, সব হারানোর ভয়।

চিত্র: সঙ্কুল দাস
নদীর টলটলে জলে দিনের প্রথম সূর্যের ছায়া পড়ত যখন, সেই সময়, কোনো-এক বিগতদিনে সরকারের জারি করা বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক, প্রায় কুড়ির কাছাকাছি কোনো সংখ্যা হবে, ছোটো-বড়ো নানান মাপের গ্রাম উজাড় হয়ে যেতে পারে—এমন আশঙ্কা তৈরি হলেও কস্মিনকালে যেহেতু কেউ ভাবতে পারেনি সত্যিই এমনটা কখনও ঘটতে পারে বলে—নদী উপকূলবর্তী জীবন, অতএব, তখনও পর্যন্ত বাধাবন্ধহীন, নিরুপদ্রব, কেটে যাচ্ছিল নিয়মমাফিক; মাঝে দেশে সরকার বদলেছে বহুবার, কখনও-সখনও উচ্ছেদ ও নির্মাণ হাত-ধরাধরি করে চেষ্টা করেছে একসঙ্গে পথ চলার—যদিও তত্ত্বে কিংবা ব্যবহারিকে—কোনোভাবেই স্থায়ী কোনো সমাধানসূত্র মেলেনি এবং একটা সময় পর থিতিয়ে গেছে সরকারি বাঁদরনাচ—সবাই প্রায়, একপ্রকার ধরেই নিয়েছিল : জন্মভূমি ও মৃত্যুভূমি অবিচ্ছিন্ন; কিন্তু জীবন যেহেতু কখনও সম্পূর্ণ চক্রাকারে ঘোরে না, আর সে-কারণেই তাদের ধারণা যে-কোনোদিন, আচমকা অথবা অত্যন্ত স্বাভাবিক লয়ে, ভেঙে যাবে—এই মতো যেহেতু ভাবেনি তারা, উচ্ছেদের চোখরাঙানি থেকেও, ফলত, এক দূরগ্রহের অধিবাসী ছিল আনপড় সেই মানুষগুলো।
ছোটো-ছোটো ঝুপড়ি আর রাস্তাহীন সার্বিক উঠোন জুড়ে ন্যাংটো কুচো বাচ্চাগুলোর মাটিতে গড়াগড়ি, খেলা। চারপাশে যেহেতু পুকুর নেই কোনো, তাছাড়া নদী এত কাছে—নদীর জলে শরীর ধুয়ে সন্ধ্যার মুখটায় ঘরে ফিরে আসে ওরা। হামাগুড়ি ছেড়ে দু’ পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়ানোর দিন থেকেই নদী ওদের বড়ো কাছের। শৈশবের অবুঝ সেইসব দিনগুলোতে এখানকার মানুষদের সঙ্গে নদীর যোগাযোগ ঘটে যায়। গায়ের জল না-মুছেই কচিকাঁচার দল, খালি পা উদোম গা, নদী থেকে এক দৌড়ে ঘরে। গাছের পাতা ছুঁয়ে সন্ধ্যা নামে তখন। ঘরের ভিতর তিরতির করে কাঁপতে থাকে কুপির আলো। তারপর আলো জ্বলে ওঠে পশ্চিমাকাশে; কলাইয়ের চ্যাপটা দাগওয়ালা থালার মতো পূর্ণিমার অমল ধবল চাঁদ উঠলে নদীর জল ফুলে-ফেঁপে ওঠে। জোয়ারের জল ক্রমাগত দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাঁধের শরীরে। ক্বচিৎ-কদাচ বান আসে ভরা কোটালের উৎপীড়িত প্রহরে। নদীপারের অস্থায়ী বাঁধ, মোটা বাঁশের ঘেরাটোপের উপর অতীত দিনের স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে ভিজে চুপচুপে হয়ে-যাওয়া সিমেন্টের সেই সার-সার বস্তার ভিতর ঠেসে ভরা মাটি—গানিব্যাগ—ছাপিয়ে উপচে তখন জল চলে আসে জনপদে। নদী, নদীবাঁধ, ভাঙন, পুনর্গঠন, সর্বোপরি মাইলের পর মাইল জঙ্গলের মালিকানা নিয়ে সরকারি দড়ি টানাটানির মধ্যে দিয়েই, একরকম হাবুডুবু খেয়ে হলেও, ভেসে চলেছিল ওদের জীবন।
এখানে ঝড় আসে প্রায়ই। মাঝে-মধ্যে ঘূর্ণিঝড়। বহু বছর ধরে সেইসব প্রাকৃতিক দুর্যোগে তাদের ঢাল হয়ে নোনা জলের মাটিতে দাঁড়িয়ে থেকেছে ম্যানগ্রোভের সবুজ অরণ্য। সুন্দরী, গরান, গেঁওয়া, কেওড়া—গাছের কত-না বিচিত্র নাম। গাছের নামে সৌন্দর্য থাকলেও জীবন এখানে তেমন নয়। কয়েক মাস আগে জনা সাতেকের একটা দল কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিল নদীর চরে। সারিবদ্ধ কাঁকড়ার পায়ের ছাপ দেখে নিজেদের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে দাঁড়িয়ে পড়েছিল পরপর ঠিক সাতজন। এক গর্ত থেকে বেরিয়ে পরের গর্তে ঢুকতে গেলেই, মাঝপথে, অন্যজনের হাতে বিলক্ষণ ধরা পড়ে যাবে। এইভাবে কাঁকড়া ধরার প্রক্রিয়া শুরু হলে পর, শিকারি সকলের তীক্ষ্ণ নজর যখন চরের ভেজা মাটির উপর, একেবারে পিছনে-থাকা বয়সে সবচেয়ে ছোটো ছেলেটিকে—যে কিনা পৌঁছে গিয়েছিল চরের একেবারে শেষ মাথায়, যার কিছু পর থেকেই শুরু হয়ে যায় গাঢ় সবুজের সম্মিলন, প্রথমে সহজ-সরল ঝোপঝাড়, আরও খানিক গেলেই ক্রমে ঘন হতে-থাকা জঙ্গল—সকলের অলক্ষ্যে, চুপিসাড়ে, টেনে নিয়ে গিয়েছিল বাঘ; হলুদের উপর অপূর্ব তুলি টানে ফুটে-ওঠা ডোরাকাটা কালো-কালো দাগ। প্রথমটায় বোঝা যায়নি কারণ যেহেতু দিনের আলো মরে আসছিল ক্রমে আর সেই সন্ধিলগ্নে অরণ্যের সবুজ অসম্ভব দ্রুততায় কালচে হয়ে উঠছিল, ফলে আঁধারের সেই গাঢ় নিরুদ্দেশে নজর পড়ে না জমির উপর শুকিয়ে-যাওয়া রক্তের ছোপে, অথবা হিড়হিড় করে টেনে নিয়ে-যাওয়ার ফলে চরের গায়ে তৈরি হওয়া পায়ের দাগে, কিংবা কোন-এক অন্ধকার কোণে মালিকানাহীন পড়ে-থাকা একখানি বেওয়ারিশ চটির উপর। এরও কিছু পরে গ্রামের লোক জড়ো হলে, আগুন জ্বলে উঠলে, দৃষ্টিতে ধরা পড়েছিল সেই সব স্মারক। হাতে লাঠি থাকার পর এবং ছেলেটির মা-বাবার আছাড়িপিছাড়ি কান্না সত্ত্বেও কেউ আর তখন সাহস দেখায়নি জঙ্গলের গভীরে ঢোকার। পরের দিন সকালে সূর্য উঠলে পর গ্রামের যুবকেরা ঝোপঝাড় পেরিয়ে ঢুকেছিল দল বেঁধে। বেশি দূর যেতে হয়নি, তার আগেই চোখে পড়ে গিয়েছিল রক্তমাখা জামাকাপড়ের ছেঁড়া টুকরো-টাকরা, আর শক্তপোক্ত একটা গাছের গুঁড়ি বেয়ে গড়িয়ে-নামা কালচে রক্ত যা তখনও পর্যন্ত পুরোপুরি শুকিয়ে যায়নি; উপস্থিত লোকজন বুঝে গিয়েছিল, ওদের মধ্যে থেকেই আরও-একজন, নির্বিকার এবং নিঃসহায়, চলে গেল বাঘের পেটে।
এইভাবে, মৃত্যু হাতে জীবন, এখানে কাটে।
গ্রাম-কে-গ্রাম উচ্ছেদ হয়ে যাবে বলে যে-দুশ্চিন্তা সাময়িক হলেও আতঙ্কিত করেছিল এখানকার মানুষগুলোকে, জলে কুমির আর ডাঙায় বাঘের উৎপাতে অনতিবিলম্বেই চিন্তাস্রোতের পিছনের দিকে সরে গিয়েছিল সেই সকল দুর্ভাবনা; প্রত্যক্ষ যেভাবে পরোক্ষ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে রাখে।
বাঁশি শুধু দেখে, সারি-সারি ম্যানগ্রোভ কেটে, তারপর সেগুলোর অগভীর শিকড় আর শ্বাসমূল উপড়ে ফেলা চলে—নির্বিচারে এবং নির্বিবাদে, যুগপৎ। ছোটো-ছোটো খন্দ যা তৈরি হয় এর ফলে, দ্রুতহাতে বালি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া সেসবের উৎসমুখ। হাড়-জিরজিরে মানুষগুলো খেটে চলে গায়ে-গতরে এক করে। তামাটে-কালো চামড়া, ঘামে পিচ্ছিল, সূর্যের আলোয় চকচক করে। তারপর সেই দিনের মতো কাজ শেষ হলে হাঁটু পর্যন্ত কাদামাখা পা উঠে আসে বাঁধে। ঠিকাদার রোজ আসে না, ক্বচিৎ-কদাচ দেখা যায় তার হম্বিতম্বি; সেইসব দিনে লোকগুলো তটস্থ থাকে; মাঝে-মধ্যে এমন-কি দেরিও হয়ে যায় দুপুরের খাওয়ায়। চাঁদনি রাতে যখন সকলের অলক্ষ্যে ক্রমে ফাঁকা হতে-থাকা ম্যানগ্রোভের সারের সামনে এসে দাঁড়ায় বাঁশি, চরাচর জুড়ে তখন জ্যোৎস্না খেলা করে। যদি-বা হাওয়া ভেসে আসে নদীর দিক থেকে, বাকি ম্যানগ্রোভের দল দুলে উঠে আলোর বুকে আবছায়ার কাঁপন ধরায়। তারা-ওঠা সেই আকাশের নিচে কঞ্চি হাতে দাঁড়ানো বাঁশির মনও বুঝি কেঁপে ওঠে—অনাবিল আনন্দে।
ব্লক অফিসের অফিসারদের সঙ্গে নিয়ে পঞ্চায়েতের মেম্বাররা ফি-বছর সভা করে গ্রামে। ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পড়তে পাঠানোর কথা বলে বারবার। বাঁশি জানে, ইশ্কুলে গেলে ভাত পাওয়া যায়, ডিম পাওয়া যায়। তবু বেশিদিন তার ভালো লাগেনি ওইসব পড়াশোনা। ম্যানগ্রোভ কাটা চলে দিনের আলোয় আর ওর মনে পড়ে ছেড়ে-আসা স্কুলের কথা : স্কুলবাড়ির দেওয়ালে, পাঁচিলহীন ছাদ আর কার্নিশের মাঝের অংশে, বড়ো একটা পেন্সিল আঁকা ছিল; সময় ক্রমে রং চটিয়ে ছেড়েছে তার। সেই পেন্সিলের মুখের দিকে বসে থাকত একটি মেয়ে, পিছন দিকে একটি ছেলে; আলাদা করে আর চেনা যায় না তাদের। স্কুলের উত্তর দিকের দেওয়ালে আঁকা হয়েছিল একটা গাছের ছবি, সবুজ আর খয়েরি রঙে। সেই গাছের ঠিক পাশে গোটা-গোটা হরফে লেখা হয়েছিল : গাছ লাগান, প্রাণ বাঁচান। এসবই তখন হয়েছিল, যখন নদীর উত্তর-পূর্ব দিকের বাঁধখানার উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রীর সঙ্গে আরও দুই মন্ত্রী—সেচমন্ত্রী আর বনমন্ত্রী—এসেছিল; দিন কয়েক আগে তড়িঘড়ি কাজ শেষ হওয়া নদীবাঁধের কাছে যাওয়ার আগে সভা হয়েছিল স্কুলমাঠে। সেই দিন আর তার আগের দু’দিন খেলা বন্ধ ছিল মাঠে। বাঁশ পুঁতে প্যান্ডেল হয়েছিল। প্যান্ডেলের চার কোণে চারটে চোঙা লাগানো হয়েছিল : মন্ত্রীদের কথা পৌঁছে যাবে প্রতিটি বাড়ির ঘরে-ঘরে। জানলা গলে, দরজা গলে, মাটির দেওয়ালের ফাটল গলে, ছাদের টালি গলে ঘরের সর্বত্র ছড়িয়ে যাবে সেই সকল অমৃতবাণী—বন্যার মাফিক।
এর বেশ কিছু পরে, ব্লক অফিসের সরকারি খাতায় বাঁশি ততদিনে স্কুলছুট, বিকালের দিকে খেলবে বলে স্কুলমাঠে এসেছিল সমবয়সি আর-পাঁচজনের সঙ্গে, তখনই দেখতে পেয়েছিল দেওয়ালে লেখা সেদিনের সেই বক্তব্য অক্ষত নেই আর। ফচকে কোনো ছেলে চুন লেপে দিয়ে গেছে চারটি শব্দের প্রথমটিতে, ফলে মলিনছাপ দেওয়ালে এখন অবিকল ফুটে আছে : লাগান, প্রাণ বাঁচান।
সেই থেকে বাঁশি বুঝেছিল, এভাবেই গাছ কেটে দেওয়া হবে। গাছ কাটা হলে কেউ কিচ্ছুটা বলবে না, কেউ কাউকে বকবে না; ম্যানগ্রোভ কেটে ফাঁকা করে দিচ্ছে যারা, তাদের যেমন কেউ বকে না।
স্কুলের পাশের রাস্তাটায় কংক্রিটের আস্তর পড়েছে। দুপুরে স্কুল শেষ হয়ে গেলে পর, বিকালের দিকে—সেই পথ যখন ধীরে-ধীরে তার ব্যস্ততা ভোলে—ইটের টুকরো দিয়ে দাগ টানে ওরা; বাঁশি আর ওর বন্ধুরা। তারপর রিনরিনে গলায় শোনা যায়, ‘চু-কিতকিত কিতকিত কিতকিত কিতকিত—’। খেলার মাঝে ঝগড়া ওদের রোজের ব্যাপার। একবার ঝগড়া শুরু হলে পর সেদিনের মতো খেলায় ইতি। পরের দিন আবারও সব ভুলে ফিরে এসে নতুন করে খেলা শুরু করে ওরা। খেলার মাঝে আচমকা যখন ঝগড়া শুরু করেছিল গেঁড়ি, বাঁশির মনে পড়ে গিয়েছিল, বাবার লাল চোখ। সাঁঝের বেলায় বাড়ি ফিরে বাবা যদি দেখে, গোঠনায় গরু ফেরেনি, আস্ত রাখবে না মোটে। বুকের গামছাটা ভালো করে জড়িয়ে নেয় বাঁশি; বন্ধুরা অনেকেই ফ্রক পরে, ওর ফ্রক নেই। স্কুলের ফ্রকটা ছিঁড়ে গেছে সেই কবে! তারপর আর কিনে দেয়নি বাবা। প্রতিবার ডিম বিক্রি করে যে-পয়সা পায়, মায়ের হাতে তুলে দেওয়ার আগে পর্যন্ত ভাবে, দেবে না এবার; বরং ওই টাকায় একটা নতুন জামা কিনবে—বাহারি ফ্রক। ভাবে আর তারপর হাঁসের ডিম বেচে যতটুকু যা পায়, তার সবটাই দিয়ে দেয় মায়ের হাতে।
ওদের বাড়ির দিকটায় তেমন ঘাস নেই; যা আছে, সবটাই নোনা ভুঁইয়ের ওদিকে। দক্ষিণ রায়ের মন্দিরের থেকে কয়েক হাত তফাতে নোনা খাল আছে। ভরা কোটালে সমুদ্রের জল ঢুকে আসে সেই খালে; তা বাদে শুখা জমি, লবণাক্ত, পড়ে থাকে। খালের আশেপাশের জমি-জিরেতে ঘাস জন্মায়—ছাতেন ঘাস। আন্দাজে ওই দিকটায় আসতেই গরু দুটোর দেখা মিলে যায়। বছর-বিয়ানো গাইগরু একটা, অন্যটা এখনও বাছুর—বকনা। বাছুরগুলো একটু বড়ো হলে, গায়ে গত্তি লাগলে পর মাজারের পাশে যে-বাজার, সেখানে নিয়ে গিয়ে বেচে দিয়ে আসে বাবা। বকনাটা এখনও তেমন বড়ো হয়নি, সেই কারণেই দুধের জোগানে টান পড়েনি। বাছুর যতদিন-না গরু হয়ে যায়, বাঁশি জানে, ততদিনই মানুষের লাভ। গরুটার পিঠে বাঁখারি দিয়ে আলগোছে মারতেই সেটা বাড়ির পথ ধরে, কিন্তু বাছুরটা বদের বাসা, লেজ তুলে ছোটে এদিক-ওদিক; যত-না ছোটে, লাফায় বেশি। বাছুরের পিছনে ছুটতে গিয়ে বুকের কাছে গামছার বাঁধন ঢিলে হয়ে আসে ওর। ওই অবস্থাতেই বাছুরটার গলার দড়ি কোনোরকমে ধরে ফেলে। সন্ধের সেই অন্ধকারে গাইগরুটা আগে চলে, পিছনে বাছুরটার গলার দড়ি শক্ত করে ধরে হাঁটে বাঁশি আর ঠিক তখনই নদীর দিক থেকে বিকট একটা শব্দ ভেসে আসে। ঘাড় ঘুরিয়ে সে দেখে, গাঢ় কালো জল আর তারাহীন আকাশের মাঝে, নদীর বুকে, আঁধার ভেদ করে ফুটে উঠেছে আলোর রেখা। গুমোট এবং ততোধিক নিস্তব্ধ পারিপার্শ্বিকের মাঝে তখন প্রবল হয়ে উঠছে লঞ্চের খোল থেকে উঠে-আসা মোটরের একঘেয়ে আওয়াজ আর থেকে-থেকে সাইরেনের বিশ্রী শব্দ। বাড়ির দিকে বাকি পথটুকু হেঁটে যেতে-যেতে বাঁশি বোঝে, মাঝনদীতে ওটা আসলে পুলিশের লঞ্চ।
জেলেদের নৌকাগুলো এক ঝলকেই চেনা যায়; ছইহীন, মোটরহীন; দাঁড় টেনে চলে কেউ-না-কেউ। যারা ঘুরতে আসে এই বাদা অঞ্চলে, তাদের জন্যও লঞ্চের বন্দোবস্ত আছে। তবে সেই লঞ্চগুলো সাধারণত দোতলা হয়ে থাকে, উপরের তলায় এলানো চেয়ারে সকাল-বিকাল এসে বসে শহর অথবা শহরঘেঁষা মফস্সল থেকে ঘুরতে-আসা ভ্রামণিকের দল; তা বাদে, ছোটো-ছোটো রকমারি আলোয় মোড়া থাকে জলের উপরে জেগে-থাকা প্রায় সবটাই। পুলিশের কিংবা সার্চপার্টির লঞ্চ দোতলা হয় না মোটে, তাতে রকমারি আলো থাকে না; অন্ধকারে জ্বলে থাকে চোখ-ধাঁধানো আলো; এছাড়াও, সাইরেন থাকে লঞ্চের ভিতর, কাজে-অকাজে বেজে ওঠে যখন-তখন।
পুলিশের লঞ্চ তীক্ষ্ণ স্বরে সাইরেন বাজিয়ে জল চিরে এগিয়ে যায় যখন, সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে চারপাশ; দম বন্ধ করে বিভ্রান্ত জনপদ তখন প্রহর গোনে আসন্ন সতর্কবার্তার। গ্রামের ছোটোরা ভয় পায় না তেমন, সাইরেনের সশব্দ উপস্থিতি ওদের কাছে সুর হয়ে আসে। দিনের বেলা হলে কচিকাঁচার দল সাইরেনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লাফাতে-লাফাতে ছোটে পার বরাবর—সমান্তরাল দৌড়; লঞ্চের সঙ্গে-সঙ্গে, স্রোতের বিপরীতে। অন্ধকার নেমে এলে চারদিক নিস্তব্ধ হয়ে যায় যখন, যদি সাইরেনের একটানা আওয়াজ শোনা যায় তখন, কিংবা হুইস্ল্ বেজে ওঠে হঠাৎ-হঠাৎ, ছ্যাঁত্ করে ওঠে বুক। মা তখন আঁকড়ে ধরে বাঁশিকে; মায়ের নরম বুকে—পুষ্টির অভাবে যা আর স্তন নেই, বহু আগেই হেলে পড়ে মাই হয়ে গেছে—মুখ গুঁজে কেঁপে-কেঁপে ওঠে বাঁশি: মা কাঁপে, সেই কাঁপনে দুলে ওঠে মেয়েও।

চিত্র: সঙ্কুল দাস
মেয়ে না-বুঝলেও মা বোঝে, বিপদের পূর্বাভাস। অতীত তার মধ্যে ঠেসে দিয়েছে ভয় : ঘর হারানোর, দোর হারানোর, সব হারানোর ভয়।
পরদিন সকাল থেকে মুখে-মুখে ছড়িয়ে পড়ে শহর থেকে ভেসে-আসা আবহাওয়া দপ্তরির পূর্বাভাস। নদীর পার ধরে স্থানীয় প্রশাসন—পঞ্চায়েত আর পুলিশ মিলে—হুড়োহুড়ি লাগিয়ে দেয় তৎক্ষণাৎ। রাতের মধ্যে সবাইকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে নিরাপদ আশ্রয়ে। এতদিনকার রকমসকমে অভ্যস্ত মানুষগুলো জানে বিপর্যয়ের মুহূর্তে তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ওই লজঝরে প্রাইমারি স্কুল আর পঞ্চায়েত অফিসের নতুন বাড়িটা; ব্লক অফিসে পৌঁছতে গেলেও নদী পেরোতে হয়—কারও একটা, কারও-বা দুটো নদী।
সেইদিন যখন শেষদুপুর ক্রমে সন্ধের দিকে এগোচ্ছিল, মরে আসছিল বিকালবেলার গুমোট আলো, জালি দিয়ে আটকানো বড়ো নালার মুখের কাছে উবু হয়ে ঝুঁকে পড়ে বাঁশি তখন দেখছিল, ভিতরে কোনো মাছ আটকে পড়ছে কিনা; ট্যাংরা ফলসে কুচো চ্যাং—এমন সব মাছ। খানিক দূরে ইতস্তত লাউ, তরমুজ, মাকাই আর কদু। হরেক কিসিমের শাক—আলুথালু, আলগোছে। আরও দূরে, নদীর ভেজা মাটিতে শামুক, গুগলি, কাঁকড়া। জঙ্গলের দিকে গেলে ভরন্ত চাক, টসটসে মধু। বাঁশির ওসবে নজর নেই; নালার ভিতর আটকে পড়ে ছটফট করতে-থাকা ছোটো মাছ খোঁজে ওর চোখ। মাছ খুঁজতে গিয়ে মাটিতে মাথা ঠেকে গিয়েছিল, ফলত কানও, আর তার কিছুক্ষণেই সোঁদা জমির উপরিতল ত্বকে পৌঁছে দিয়েছিল উত্তপ্ত অনুভব। গরম হাওয়া উঠে আসছিল পাক খেয়ে; উপরের শীতল বাতাস নেমে আসার অপেক্ষা এরপর : উপকূলে—স্থলজমি পাওয়া মাত্র—অতঃপর আছড়ে পড়বে ঝড় শুধু ঝড়।
আবহে থেকে-থেকে হুইস্ল্ আর সতর্ক সাইরেন বেজে চলে। উপরের দিকে পাক খেয়ে ওঠা গরম হাওয়ার ভিতর দিয়ে বাড়ির পথ ধরে বাঁশি। সাইরেনের একটানা আওয়াজ সুরেলা লাগে না আর; বিরক্তিকর, একঘেয়ে ঠেকে। ঘরে ফেরার পথে মিষ্টি জলের মাছগুলোর পরিণতি ভেবে চোখ ছলছল করে ওঠে ওর।
ঘরে ঢুকতেই তক্তাপোশের সামনে কাপড় আর প্ল্যাস্টিকের ডেলা চোখে পড়ে বাঁশির। দ্রুত অথচ যত্নে মুড়ি-বাতাসা বেঁধে রেখেছে মা। ঝড় থেমে গেলে পর সময় লাগে জল নামতে, রিলিফ্ আসতেও; ততদিন এই মুড়িই ভরসা। রয়ে-সয়ে খেতে হয় তখন। রুটি বাসি হয়ে গেলে দাঁতে কাটে না, যদি-বা ছেঁড়া যায়, চেবানো অসম্ভব হয়। জল দিয়ে গিলে নেবে, সে-উপায়ও থাকে না প্রথম ক’টা দিন; পঞ্চায়েত থেকে পানীয় জল দেওয়া হয় হিসাব করে। ওর চেয়ে বরং ধীরে-সুস্থে শুকনো মুড়ি-বাতাসা চিবিয়ে খেয়ে শেষে অল্প জল খেয়ে নেওয়া যায়। মুড়ি একদিক দিয়ে ভালো, ওতে অম্বলের সম্ভাবনা থাকে না তেমন।
দ্রুত হাতে কাজ সারতে থাকে মা, মাঝে-মধ্যে আঁচল দিয়ে মুছে নেয় গলার উপর ফুটে-ওঠা স্বেদবিন্দু। সেই দেখে পায়ে-পায়ে এগিয়ে আসে বাঁশি, পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে মায়ের গলা। মুখ না-ঘুরিয়েই মা আলতো হাত রাখে মেয়ের গালে, এককোণে ঢাকা খাবারের দিকে ইশারা করে, খেয়ে নিতে বলে চটপট। রাতভিতেই হয়তো ঘর ছাড়তে হবে; কিংবা, ভাগ্য ভালো থাকলে, কাল সকাল-সকাল।
রাত কেটে যায় আশঙ্কায়। বিনিদ্র প্রহর শেষে সকাল আসে। সূর্য ওঠার সময় পেরিয়ে গেলেও আলো ফোটে না সেভাবে। কালোকুঁদো আকাশের শরীর জুড়ে ইতিউতি তৈরি হয়ে গেছে রন্ধ্রপথ; সেইসব ছিদ্র বেয়ে ঘুলঘুলির মাফিক এসে পড়ে যৎসামান্য আলোর আভাস। পুলিশেরা ফাঁকা করে দেয় সব ঘর। সার বেঁধে মানুষগুলো এগিয়ে যায় প্রাইমারি স্কুলের দিকে। কিছু দূরে পঞ্চায়েত অফিসের সামনে জটলা : খাটো গলায় কথা বলে মেম্বাররা, মাতব্বরেরা। ঘ্যারঘ্যার শব্দ তুলে দুটো ভ্যান এসে থামে। হাতে-হাতে ত্রিপল নামানো হলে সেসব চলে যায় পঞ্চায়েত অফিসে। পরিবর্তে ছেঁদা হয়ে-যাওয়া পুরোনো ত্রিপলের স্তূপ অফিসঘর থেকে বের করে পৌঁছে দেওয়া হয় প্রাইমারি স্কুলের বারান্দায় : সরকারের তরফে ত্রাণের প্রথম পর্যায়।
বেলা বাড়ে, বৃষ্টির দাপটও বাড়ে পাল্লা দিয়ে। ফুটিফাটা ত্রিপল বিছিয়ে দেওয়া হয় বারান্দার উপরের মরচে পড়া গ্রিল আর সিঁড়ির চাতালের সাত ফুট বাই চার ফুটের বড়ো ঘুলঘুলি দিয়ে। দলা পাকানো দুটো ত্রিপল গুঁজে আটকানো হয় ন্যাড়া ছাদের দরজার নিচের ফাঁকা অংশ। স্কুলঘরের ভিতর মানুষে ছয়লাপ। ঘর জুড়ে ঘামের গন্ধ। ফাঁক গলে একটা ছাগলছানা ঢুকে গিয়েছিল কোনোভাবে, আপাতত বারান্দায় কাতর স্বরে ডেকে চলেছে নাগাড়ে। বাঁশি বেরিয়ে আসে ঘর থেকে। অত মানুষের গুমরে-ওঠা হাহুতাশে ভারী হয়ে উঠেছে ঘরের ভিতরের বাতাস। বারান্দায় আসা মাত্র ওর চোখে পড়ে, ছাগলছানাটা ভয়ে শুধু ত্রাহি চিৎকারই করছে না, মেঝে জুড়ে হেগে ছড়িয়েছে। ছানাটিকে কোলে তুলে নিয়ে গ্রিলের ত্রিপলের একটা দিক সামান্য ফাঁক করে বাঁশি। বাইরে জল বাড়ছে ক্রমশ। বৃষ্টির তোড়ে ঝাপসা চারপাশ, সেইভাবে দেখা যায় না দূরের দৃশ্য। ঝমাঝ্ঝম বৃষ্টির আওয়াজ ছাপিয়ে, থেকে-থেকে, সেই সুদূর থেকে ভেসে আসে আরও তীব্র ভয়ার্ত রব—আর্তনাদ : গোয়ালের বাঁধা খুলে ছেড়ে দেওয়া গরুদের সম্মিলিত হাম্বাধ্বনি ভেসে আসে, প্রতিধ্বনির মতো শোনায়। বাঁশির মন চায় ওই নিরীহ পশুগুলোকেও নিয়ে আসতে এই ছাদের নিচে, স্কুলবাড়ির ভিতর; কিন্তু সে জানে না যে, মানুষের মতো ওদের ভোট নেই, যেমন গাছেদেরও নেই; তাই নির্বিচারে গাছ কাটা চলে, গবাদি পশুদেরও আলাদা করে বাঁচানোয় কোনো হেলদোল থাকে না পঞ্চায়েতের।
বিকাল হতে-না-হতেই চারপাশ এমন আঁধার করে আসে, খোঁজ পড়ে জেনারেটরের। স্বচ্ছ বর্ষাতি গড়িয়ে জল নামে, ফলে ভিতরের খাকি পোশাকের রং সেভাবে ঠাহর হয় না, তিনজন পুলিশ অপটু হাতে চেষ্টা করে জেনারেটর চালানোর। ফাটা ত্রিপলে ঢাকা থাকার কারণে জল ঢুকে মেশিন চলতে চায় না আর; ভটভট করে শব্দ তোলে কোনোরকমে, গলগলিয়ে কালো ধোঁয়া বেরোয়, থেমে যায় পরক্ষণেই। ঘর এবং বাহির, যুগপৎ, আন্ধারে ডুবে থাকে। একমাত্র পঞ্চায়েত অফিস থেকে জেনারেটরের শব্দ শোনা যায়, এমনকি আলোরও দেখা মেলে।
ছাদের তলায় আশ্রয় পাওয়া মানুষগুলোও চুপ করে যায় একসময়, নেতিয়ে পড়ে ক্লান্তিতে। বাইরে বৃষ্টির তোড় বাড়ে। অবিরাম বর্ষণেও মেঘ অক্লান্ত। সন্ধে থেকে তারস্বরে ডেকে চলে নিরাশ্রয় কাকের দল; দুর্যোগে ভেঙে গেছে তাদের ঘর। যত রাত বাড়ে, আরও অনেক অচেনা ডাক হৃদয়ে কাঁপন ধরায়। সেলফোনের টর্চ জ্বলে উঠলে দরজার সামনে দিয়ে বারান্দার দিকে এঁকেবেঁকে চলে যায় একটা চন্দ্রবোড়া সাপ। বৃষ্টি থামার কোনো লক্ষণ দেখা যায় না।
ভোর হওয়ার আগে রক্তিম হয়ে ওঠে পশ্চিমাকাশ। একজন পুলিশ এসে জানিয়ে যায়, ঝড় সরে গেছে বাংলাদেশের দিকে। খবর শোনার সঙ্গে-সঙ্গে সম্মিলিত নিশ্বাস অনুরণন তোলে ঘর জুড়ে। আরও অনেকটা সময় ধরে পশ্চিমের আকাশ রক্তবমি করে চলে। সেই সময়টুকুর জন্য অঝোর বৃষ্টিপাতে সাময়িক বিরতি আসে। সব রং নিভে গেলে পর আবারও পূর্ণ উদ্যমে শুরু হয় বৃষ্টি। স্কুলমাঠের জল এসে ঘাই মারে বারান্দার গাঁথনির শেষ সীমায়। আন্দোলনে চলকে উঠে অল্পবিস্তর জল ঢুকেও আসে বারান্দায়। আরও কিছু পরে জল বেড়ে বারান্দা ভাসায়। বারান্দার জলে খেলা করে ছাগলের নাদি। একটা ব্যাঙের ওলটানো মৃতদেহ ভাসতে-ভাসতে কোণে গিয়ে আটকায়। পুলিশ তোড়জোড় করে ঘরের ভিতর মাথাগোঁজা লোকগুলোকে নির্দেশ দেয় ছাদে উঠে যাওয়ার।
ভেজা ছাদ, বিক্ষিপ্ত জমে-থাকা জল, তারই মাঝে ছিঁড়ে-ফেটে ফর্দাফাই হয়ে-যাওয়া ত্রিপল দিয়ে শরীর জড়িয়ে বসে পড়ে মানুষগুলো। স্কুলের তুলনায় পঞ্চায়েত অফিসের গোবরাট অনেকটা উঁচু হওয়ায় সেখানে জল ঢোকেনি তেমন। পঞ্চায়েতের মেম্বার আর মাতব্বরদের, স্কুলবাড়ির ছাদ থেকে অস্পষ্ট দেখার ফলে প্রেতচ্ছায়ার মতো মনে হয়, ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় অফিসের বারান্দায়। সেসব ছাপিয়ে মেঘের মতো ভেসে যায় ধোঁয়া—সিগারেট অথবা বিড়ির। বাঁশি দেখে, মায়ের কোলের ঝুড়িতে রাখা কয়েকটা কাপড়ের পুঁটলি ভিজে গেছে অন্ধকারের অসাবধানতায়; প্ল্যাস্টিকের ভিতরের মুড়ি-বাতাসা যদিও ঠিক আছে।
ঝড়ের পূর্বাভাস কেটে গিয়েছিল আগেই। বেলা যত বাড়ে, কমতে-কমতে একটা সময় ধরে আসে বৃষ্টি। মেঘ সরিয়ে রোদ ওঠে। প্রাইমারি স্কুলের ছাদে, কোলে ছাগলছানা, বাঁশি দাঁড়িয়ে আকাশ দেখে একবার, পরমুহূর্তে স্কুলমাঠের জমা জল দেখে। সূর্যের নরম আলো, অমল প্রত্যূষের মতো পেলব, এসে পড়ে বাঁশির মুখে। সেই মায়াবী আলোয় বাঁশি দেখে এর পরের কিছু-কিছু দৃশ্যাবলি : শহুরে রিলিফ্ হাত পেতে নিচ্ছে মা। সরকারি ত্রিপল ঢুকে যাচ্ছে মেম্বারের বাড়ি, রেশন বুঝে নিচ্ছে মাতব্বর। ম্যানগ্রোভ কাটা শুরু হচ্ছে নতুন করে। হাতে-হাতে গানিব্যাগ বসে যাচ্ছে অস্থায়ী নদীবাঁধে। স্থায়ী বাঁধের কাজ, প্রতিবারের মতোই, শুরুও হচ্ছে না।
অন্ধকার থেকে আলোয় এসে ধাঁধা লাগে। চোখ ছলছল করে বাঁশির। বৃষ্টি নামে ফের।
♦–♦♦–♦♦–♦
গল্পকারের পরিচিতি: জন্ম ১২ আষাঢ় ১৩৯২। ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট থেকে প্রকাশিত ‘নবলেখন বাংলা গল্প সংকলন’-এ তাঁর ‘মাছ’ গল্পটি স্থান পেয়েছে। প্রকাশিত বই : ‘গাঢ় লাল লিপস্টিক এবং মেরিলিন মনরোর গল্প’, ‘এখানে যত্নসহকারে চক্ষু পরীক্ষা করা হয়’, ‘হাঁকামনা’, ‘অ-এ অজগর আসছে তেড়ে’ এবং ‘মণিকর্ণিকা’। ‘এখানে যত্নসহকারে চক্ষু পরীক্ষা করা হয়’ গল্পসংকলনের জন্য ২০১৮ সালে পেয়েছেন রবিশংকর বল স্মারক সম্মান।
চিত্রি পরিচিতি: সঙ্কুল দাস বারাসাত আকাদেমি অফ কালচারের ছাত্র।উত্তর চব্বিশ পরগনার বাসিন্দা।
গল্পের সমস্ত চরিত্র এবং ঘটনা কাল্পনিক । বাস্তবের সাথে এর কোন মিল নেই, কেউ যদি মিল খুঁজে পান তাহলে তা অনিচ্ছাকৃত এবং কাকতালীয় ।
❤ Support Us