- এই মুহূর্তে দে । শ
- অক্টোবর ১৯, ২০২৩
মমতার অনুকরণে এবার অসমের দুর্গাপুজোয় অনুদান ! ঘোষণা হিমন্তের
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমালোচনা করে শেষ পর্যন্ত তাঁর দেখানো পথেই চলতে হচ্ছে বিজেপি, কংগ্রেস সহ দেশের অন্য দলকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি হয়ে উঠছেন তৃণমূল বিরোধীদের রোলমডেল ! বিষয়টা সেই দিকেই যাচ্ছে। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুকরণে অসম সরকার সেই রাজ্যের দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে সরকারি অনুদান দিচ্ছে। অথচ বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন বাংলার দুর্গাপুজো কমিটিগুলোকে রাজকোষ থেকে অনুদানের টাকা দেন তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করতে এবারও ছাড়েননি। তাহলে কী অসমের হিমন্তবিশ্ব শর্মার সরকার সেই রাজ্যের দুর্গাপুজো কমিটিগুলোকে যে অনুদান দিতে চলেছে সেই খবর বাংলার বিজেপি নেতাদের কাছে ছিল না? না হলে কেন এই বছর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ৭০ হাজার টাকা করে প্রতি দুর্গাপুজো কমিটিকে দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন সঙ্গে সঙ্গে বিজেপি সমালোচনায় ঝাঁপিয়ে পড়ল?
ঠিক একই ভাবে ২০২১-সালে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে সাধারণ সম্প্রদায়ের মহিলাদের জন্য মাসিক ৫০০ টাকা ও এসসি, এসটি সম্প্রদায়ের জন্য ১০০০ টাকা মাসিক অনুদান ঘোষণা করলেন তখন বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস এই প্রকল্পকে ভিক্ষা বলে কটাক্ষ করেছিল। সম্প্রতি পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার সভায় শুভেন্দু অধিকারীকে বলতে শোনা গেছে, আপনারা আমাদের ভোট দিন, আমরা ক্ষমতায় এলে লক্ষ্মীর ভান্ডারে মাসে ২০০০ তাকে করে সব মা,বোনেদের দেব। কর্ণাটকেও সদ্য শেষ হওয়া বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রচারে কংগ্রেস মহিলাদের মাসিক ২০০০ টাকা ভাতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষয়মতায় এসেই প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেই প্রকল্পের টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন করিয়েছে।
বাংলার দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে নবান্নের পক্ষ থেকে আর্থিক অনুদান ঘোষণার প্রথম বছর থেকেই কোমর বেঁধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নানা কটূক্তি বিজেপি নেতারা শুরু করেছিলেন, প্রশ্ন তাঁরা এখন কোথায়? দুর্গাপুজো কিনতে চাইছে তৃণমূল সুপ্রিমো এমনও অভিযোগ তোলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। প্রতিবেশী রাজ্য অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার মুখেও এই ইস্যুতে মমতার বিরুদ্ধে কটাক্ষও শোনা গিয়েছিল। এই বিষয়ে হিমন্তের বক্তব্য ছিল, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আর্থিক অনুদান দেওয়া কোনও সরকারের কাজ হতে পারে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া আক্রমণও করা হয়েছিল। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে বাংলাকে অনুকরণ করল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথে হেঁটে অসম সরকারও দুর্গাপুজোয় অনুদান চালু করল।
তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অনুদানের অংকে পাল্লা দিয়ে পেরে ওঠেননি বিজেপির উত্তর–পূর্বের মুখ হিমন্ত বিশ্বশর্মা সরকার। হিমন্তের ঘোষণা করেছে, অসমের প্রত্যেকটি দুর্গাপুজো কমিটিকে ১০ হাজার টাকা করে সরকারি অনুদান দেওয়া হবে। এক সময় যে কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করা হয়েছিল, এবার তাঁকেই অনুকরণ করা হল কোন? বিজেপির কাছে সেই উত্তর নেই। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য বলছে, একেই বলে ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে বাংলার দুর্গাপুজো নিয়ে কুৎসা, মিথ্যাচার এখন বুমেরাং হয়ে যাচ্ছে বিজেপির কাছে। আগে বিজেপি বলেছিল, বাংলায় দুর্গাপুজো করতে দেওয়া হয় না। এখন সেই কলকাতাতেই দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করতে এসেছেন অমিত শাহ। এই তথ্য তুলে ধরেছেন স্বয়ং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে আর্থিক সাহায্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহু বছর ধরে করে আসছেন।
সম্প্রতি অসমের দিসপুরে অসম মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা, ক্যাবিনেট মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে আর্থিক অনুদান দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। এই বিষয়ে অসমের পর্যটনমন্ত্রী জয়ন্ত মালাবড়ুয়া সাংবাদিকদের জানান, রাজ্যের মোট ৬ হাজার ৯৫৩টি দুর্গাপুজো কমিটিকে অনুদান দেওয়া হবে। টানা তিন বছর দুর্গাপুজো করছে তারাই এই অনুদান পাবে। চাঁদার জোরজলুম রুখতেই এই পদক্ষেপ। এবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো পথেই তাহলে হাঁটতে হচ্ছে হিমন্ত বিশ্বশর্মার অসম সরকারকে।
তবে এখন এই নিয়ে বাংলার বিজেপি নেতাদের মুখে কোনও শব্দ শোনা যাচ্ছে না। তাঁরা এখন কোথায় লুকিয়েছেন? এই প্রশ্ন তুলছে তৃণমূল।
❤ Support Us