Advertisement
  • দে । শ
  • এপ্রিল ২৯, ২০২৪

সারা দেশে বাম প্রার্থী ৪৪,বাংলায় ১৭,কেরলে ১৫,অন্যান্য রাজ্যে ১২। সংসদে কি বাড়বে তাঁদের আসন?

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
সারা দেশে বাম প্রার্থী ৪৪,বাংলায় ১৭,কেরলে ১৫,অন্যান্য রাজ্যে ১২।  সংসদে কি বাড়বে তাঁদের আসন?

তীব্র গরম উপেক্ষা করে চলছে ভোট প্রক্রিয়া।বাম,কংগ্রেস,তৃণমূল,বিজেপি, সমাজবাদী পার্টি,বহুজন সমাজবাদী পার্টি,রাষ্ট্রীয় জনতা দল, জনতা দল(সেকুলার),বিজু জনতা দল সারা দেশ জুড়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ও কর্মীরা সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন ভোটের কাজে। কেউই কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ। বাংলায় যেমন বিরোধী বাম-বিজেপির নিশানায় শাসকদল তৃণমূল, তেমনি কেন্দ্রে ইন্ডিয়া জোটের বিপক্ষে বিজেপি শাসিত এনডিএ সরকার।ইন্ডিয়া জোটে বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল একে অন্যের জোটসঙ্গী,আবার পারস্পরিক বিরোধিতাও রয়েছে।২৮টি রাজ্যে বিজেপি জোট ক্ষমতায় আসীন,৪ টি রাজ্যে কংগ্রেস।দক্ষিন ভারতে বিজেপির সংগঠন এখনও মজবুত না হওয়ার দরুন বাম,কংগ্রেস সেখানে যথেষ্ট শক্তিশালী।তাদের আসন সংখ্যা আরও বাড়বে বলে তারা আত্মবিশ্বাসী।ইন্ডিয়া জোটের এক সময়ের সঙ্গী দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারি এবং বিহারের নীতিশ কুমারের এন ডি এ জোটে ফিরে আসা সংসদীয় রাজনীতিতে যথেষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

প্রশ্ন হল বামেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে।চলমান লোকসভা ভোটে সংসদে নিজেদের আসন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তারা আশাবাদী।কারণ পশ্চিমবঙ্গ,ত্রিপুরা এবং দক্ষিন ভারতে এখনও তাদের প্রভাব অনেকটা অক্ষুন্ন রয়েছে। সারা দেশে মোট ৪৪ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বামেরা,পশ্চিমবঙ্গে তারা ১৭ আসনে লড়াই করছেন।নিজেদের শক্ত ঘাঁটি কেরালায় লড়ছেন ১৫টি আসনে। এককালের বাম দুর্গ ত্রিপুরায় তাদের প্রার্থী সংখ্যা মাত্র ১। বিহারে ১টি,ঝাড়খন্ডে ১টি,আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ১টি,পাঞ্জাবে ১টি,আসামে ১টি,তামিলনাডুতে ২টি,রাজস্থানে ২টি,অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্ণাটকে ১টি করে আসনে তাঁরা লড়ছেন। বঙ্গে যৎসামান্য প্রভাব ফেললেও বিজেপির রামমন্দির নির্ভর হিন্দুত্বের রাজনীতি কাজ করেনি মন্দিরময় দক্ষিন ভারতে। সিপিআইএমের পলিটব্যুরো সদস্য ও তামিলনাডুর প্রবীণ রাজনীতিক জি রামাকৃষ্ণন বলেছেন,“দক্ষিণ ভারতের মানুষ হিন্দুধর্মের বিরুদ্ধে নন, হিন্দুত্বের বিরোধী।” বর্ষীয়ান এই বামপন্থী নেতার মতে,” হিন্দুত্ববাদীদের আইকন সাভারকর নিজেই বলেছিলেন হিন্দুত্ব আর হিন্দু ধর্ম এক জিনিস নয়। তাদের হিন্দুত্ব একটা রাজনৈতিক কৌশল যা দক্ষিণ ভারতের মানুষ চিরকাল বর্জন করে এসেছে,”। বস্তুত বিজেপির হিন্দুত্ববাদ দাক্ষিণাত্যের ‘হিন্দুত্ব’ থেকে অনেকটাই আলাদা।কেরালায় যেমন হিন্দু, মুসলিম ও খ্রিষ্টান– তিন সম্প্রদায়ই প্রায় সমান শক্তিশালী, এবং তাঁরা চিরকাল সহাবস্থানের রাজনীতিতেই বিশ্বাস করে এসেছেন বলে তাদের স্বাক্ষরতার হার দেশের মধ্যে ১০০%।তাদের ভাবনাচিন্তায় বিজেপি উত্তর ভারতীয় গোবলয় সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। কোনদিন দ্রাবিড় সংস্কৃতি ও দ্রাবিড় ভাষা নিয়ে খুব মাথাব্যথা নেই। তাঁদের এই সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করছে বামসহ বিজেপি বিরোধী দলগুলি।

 

পশ্চিমবঙ্গসহ বাকি রাজ্যে বিপুল ভোটে বামপ্রার্থীরা জয়লাভ করবেন , এরকম আগাম ছবি অতি বড় বামপন্থীও ভাবছেননা। কারণ বাস্তবটা অনেকটা আলাদা। ভারত চিরকালই ব্যক্তিপূজায় বিশ্বাসী। সেখানে দলগত আদর্শে বিশ্বাসী বাম দলগুলিকে অনেকখানি পরিশ্রম করতে হবে জাতীয় রাজনীতিতে চোখে পড়ার মতো দল হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে এবং ভারতীয় জনসমাজের মূল স্রোতে মিশতে। সীতারাম ইয়েচুরি বা প্রকাশ কারাতের মতো রাজনৈতিক তাত্বিকরা নয়, দরকার হান্নান মোল্লাদের মতো নেতা, যাঁরা সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছতে পারেন। নাহলে জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী না করার মতো “ঐতিহাসিক ভুল” হয়ে যায়। আসন যেখানে জেতা কঠিন সেখানে নজর থাকবে ভোট শতাংশের দিকে।জনপ্রিয়তাকে অস্বীকার করে সংসদীয় ব্যবস্থায় নির্বাচনে সফল হওয়া কঠিন।সাধারণ বাম কর্মীদের বিশ্বাস শুধু মীনাক্ষী, প্রতিকুর, সৃজন, দিপ্সিতাদের নিয়ে স্বপ্ন ভোটে সাফল্য আনবেনা।ভোটারদের বুথমুখী করতে হবে।লড়তে হবে

জনমুখী আর প্রবল জনপ্রিয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তার বিরুদ্ধে।এটা আমাদের ধারণা নয়,এই বিশ্বাস সাধারণ ভোটারের।বামপন্থীরা ইন্ডিয়া জোটের শরিক হয়েছেন, কিন্তু বাংলায় তাঁদের লড়াই প্রধানত তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আবার কেরলে কংগ্রেস তাঁদের মূল প্রতিপক্ষ। কেন্দ্রীয় শাসকবর্গ বাম-কংগ্রেসের ঘরোয়া দ্বন্দকে ব্যবহার করছে।এসব প্রতিদ্বন্দ্বিতা সত্বেও, বামপন্থীদের আশা সংসদে এবার তাঁদের আসন বারবে।বাংলা থেকেও বাড়বে বাম প্রতিনিধিত্ব।কোন রাজ্যে কটা আসন পাবে বলা মুশকিল। তির্যক উত্তাপ ভয় দেখাচ্ছে,আশা জাগাচ্ছে বর্ষার প্রত্যাশা আর তারুণ্যের নির্দাগ মুখচ্ছবি।


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!