Advertisement
  • এই মুহূর্তে দে । শ
  • জুন ১৯, ২০২৩

কেন্দ্রীয় বাহিনী ইস্যুতে কমিশনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা শুভেন্দু, আবু হাসেমের

আরম্ভ ওয়েব ডেস্ক
কেন্দ্রীয় বাহিনী ইস্যুতে কমিশনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা শুভেন্দু, আবু হাসেমের

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রের কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার আবেদন না জানিয়ে আদালত অবমাননা করেছে বলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একই অভিযোগে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেছেন কংগ্রেস নেতা আবু হাসেম খান চৌধুরী। এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন না করার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

গত ১৫ জুন, বৃহস্পতিবার, কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম রাজ্য কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের সর্বত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। তবে সেই নির্দেশের পর প্রায় ৯০ ঘণ্টা অতিক্রান্ত। রাজ্য কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে কেন্দ্রের কাছে কোনও আর্জি জানায়নি। উল্টে কেন্দ্রীয় বাহিনী সম্পর্কিত কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে চলে গেছে রাজ্য এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তাই শুভেন্দুর অধিকারীর অভিযোগ, রাজ্য নির্বাচন কমিশন আদালত অবমাননা করেছে। এই একই অভিযোগে হাই কোর্টের মামলা করেছেন কংগ্রেস নেতা আবু হাসেম খান চৌধুরী। মামলাকারী বিজেপি ও কংগ্রেস, এই দুই নেতারই অভিযোগ, বাহিনী মোতায়েন ছাড়াও আদালত সব ভোট প্রক্রিয়ার ভিডিয়োগ্রাফির নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশও  পালন করা হয়নি কমিশনের তরফে। তাই এটা আদালত অবমাননা।

গত পঞ্চায়েত নির্বাচন অর্থাৎ ২০১৮ -র পঞ্চায়েত নির্বাচনে বল্গাহীন হিংসা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল রাজ্যে। ২০২৩ সালে সেটারই পুনরাবৃত্তি ঘটছে বলে বিরোধীদের দাবি । ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের ঘোষণা পর থেকেই রাজ্যের একাধিক জায়গায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে। মনোনয়নের পর থেকে টানা ১০ দিনে রাজ্যে ৭টি প্রাণ ঝরেছে এই পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। বোমা, গুলি পড়েছে অগুনতি, কিছুই বাদ যায়নি। এই ঘটনার পরেও পুলিশ কিছুই করতে পারছে না। তাই এই পুলিশকে দিয়ে কোনও ভাবেই পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে পারে না বলে প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে বিরোধীরা। অথচ কমিশনের ভরসা এই পুলিশেই।  গত বৃহস্পতিবার ছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। সেদিন উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ায় সিপিএম কংগ্রেসের মিছিলে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় মৃত্যু হয় এক বাম কর্মীর। এদিকে ভাঙড়েও আইএসএফ-এর দুই কর্মীর মৃত্যু হয়। এছাড়া দিনহাটায় হিংসার বলি হয়েছেন বিজেপি প্রার্থীর আত্মীয়। গত ১০ দিনে মোট ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও কমশিনের খাতায় মৃতের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত শূন্য! মনোনয়ন তুলে নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই বিরোধীদের দেওয়ার অভিযোগ উঠছে জেলায় জেলায়। আরও একাধিক ঘটনা ঘটছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে।

এসবের পরেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রাজ্য সরকার ও কমিশনের সেই আবেদন শুনতে রাজি হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের  আবেদন শুনবে দেশের শীর্ষ আদালত। এদিকে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে রাজনৈতিক তরজা এখন চরমে। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় খোলা চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন বিরোধীদের। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রুখতে মরিয়া রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। প্রয়োজনে অন্য রাজ্য থেকে পুলিশ এনে ভোট করাতে তারা রাজি। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের প্রথম থেকেই বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোনও প্রয়োজন নেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে নেই। এই নিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্ট কী রায় দেয়, সেদিকেই নজর সবার। তবে এরই মাঝে আবার হাই কোর্টে দায়ের হল আদালত অবমাননা সংক্রান্ত আবেদন করল বিরোধীরা। বিরোধীদের বক্তব্য, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনার চলছেন। রাজীব সিনহা আসলে মুখ্যমন্ত্রীর পোষ্য। তাই তিনি যা বলছেন তাই কমিশন করছে, ওরা ভুলে গেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন একটি স্বশাসিত সংস্থা।”


  • Tags:
❤ Support Us
error: Content is protected !!