- এই মুহূর্তে দে । শ
- অক্টোবর ২৭, ২০২৩
জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতারের পরই এক্স হ্যান্ডেলে সরব শুভেন্দু, সুকান্ত । তৃণমূলের অভিযোগ, সবটাই রাজনৈতিক চক্রান্ত
রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী ও বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতারির পর সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূলের সমালোচনায় সরব হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদার। তাদের বক্তব্যের নির্যাস হচ্ছে কান এসেছে, এবার মাথা আসবে। এদিকে জ্যোতিপ্রিয়র গ্রেফতারি নিয়ে মুখ খুলেছেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, “কাউকে গ্রেপ্তার করা মানেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হওয়া নয়। আগেও গ্রেপ্তার হয়েছে। তাঁদের বিচার এখনও চলছে। বিজেপি বুঝতে পারছে বাংলায় তাঁদের অবস্থা আরও সঙ্গীন। পরের লোকসভা ভোটেও জনসমর্থন পাবে না। তাই প্রশাসনিক নয়, তদন্তকারী সংস্থাকে এভাবে কাজে লাগিয়ে তৃণমূল নেতাদের একে একে জেলে পাঠাচ্ছে।”
The Kingpin of the Ration Scam has finally been caught… The Truth will always prevail…#shameontmc #sbameonmamata #TMC@abhishekaitc @MamataOfficial pic.twitter.com/qVKCBKjPGT
— Dr. Sukanta Majumdar (@DrSukantaBJP) October 27, 2023
এক্স হ্যান্ডেলে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ লিখেছেন, “শুভেন্দু ও বিজেপি ওয়াশিং মেশিন রাজনীতি করছে। এটা ষড়যন্ত্র নাহলে এতদিনে তাঁরই জেলে থাকার কথা।”
LoP @SuvenduWB you must have it easy safe by the washing-machine rajneeti of your Party.
Releasing caged-dogs ED & CBI on opposition leaders, @BJP4India has proved its witch-hunting practices are purely out of vendetta, otherwise we all know that you too would be sitting in jail… https://t.co/hNRX76GTPB
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) October 27, 2023
রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী ও বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় ইডি গ্রেফতার করার পরই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তাঁদের এক্স হ্যান্ডেলে এই গ্রেফতারির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তৃণমূলকে বিঁধে নানান রাজনৈতিক তির্যক বিষয় পোস্ট করছেন। শুভেন্দু অধিকারী তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন এর পর হয়তো মন্ত্রিসভার বৈঠক ও বিধানসভার অধিবেশন জেলের মধ্যে ডাকতে হবে: তার পর নিচে তিনি তৃণমূলের যে যে মন্ত্রী বিধায়ক গ্রেফতার হলেন লিখে তারিখ দিয়ে একটি তালিকা দিয়েছেন। তাতে তিনি এই মন্ত্রী বিধায়কদের গ্রেফতারির তারিখ ও নাম উল্লেখ করে লিখেছেন, ২৩ জুলাই ২০২২ পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ১১ অক্টোবর, ২০২২ মানিক ভট্টাচার্য, ১৭ এপ্রিল ২০২৩ জীবনকৃষ্ণ সাহা, ২৭ অক্টোবর ২০২৩ জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
এর পর হয়তো মন্ত্রিসভার বৈঠক ও বিধানসভার অধিবেশন জেলের মধ্যে ডাকতে হবে:- pic.twitter.com/KjEWkcFr87
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) October 27, 2023
I would urge the @dir_ed to probe the role of Mamata Banerjee in the huge WB Ration Distribution Scam:-
Chief Minister Mamata Banerjee didn’t appoint Jyotipriya Mallick as the Minister in Charge of the Food & Supplies Department; Govt of WB, in 2021 as she wanted to save him…
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) October 27, 2023
শুভেন্দু তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে আর একটি পোস্টে লিখেছেন, “আমি ইডির অনুরোধ করব, পশ্চিমবঙ্গের বিশাল রেশন বন্টন কেলেঙ্কারিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত করতে ”
কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত করতে হবে, তার ব্যাখ্যা দিয়ে শুভেন্দু তাঁর পোস্টে লিখেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জ্যোতিপ্রিয়া মল্লিককে খাদ্য ও সরবরাহ বিভাগের দায়িত্বে নিযুক্ত করেননি ; ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী হিসাবে এক দশক ধরে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার পরে, ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষে তিনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির হাত থেকে তাঁকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন।
যাইহোক, তিনি (মুখ্যমন্ত্রী) চেয়েছিলেন যে তিনি (জ্যোতিপ্রিয়) অবৈধভাবে তহবিল সংগ্রহ করতে থাকবেন এবং আয়ের অংশ নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে হস্তান্তর করবেন।
তাই একটি উপায় হিসাবে তিনি তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ অত্যাবশ্যক পণ্য সরবরাহ কর্পোরেশন বা ডব্লিউবিইসিএসসি-র চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ করেন; পশ্চিমবঙ্গে ধান ও অন্যান্য খাদ্যশস্য সংগ্রহ ও বিতরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই সংস্থা।
শুধু এইটুকুতেই থেমে থাকেননি শুভেন্দু। এর পর শুভেন্দু লিখেছেন, “তহবিল তছরুপ সুচারুভাবে এবং দক্ষতার সাথে যাতে সম্পন্ন হয় তা নিশ্চিত করার জন্য, তিনি এ সুব্বিয়াহকে ওয়েস্ট বেঙ্গল এসেনশিয়াল কমোডিটি সাপ্লাই কর্পোরেশনের বা ডব্লিউবিইসিএসসি-র এমডি হিসাবে নিযুক্ত করেন, এই বয়স্ক, অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসারকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সুবিধার্থেই নিয়োগ করা হয়েছিল।”
এ. সুব্বিয়াহ কে? যাঁর বিরুদ্ধে শুভেন্দু অধিকারী এক্স হ্যান্ডেলে অভিযোগ করছেন? এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন “এ. সুব্বিয়াহ ১৯৯২ ব্যাচের একজন পশ্চিমবঙ্গ-ক্যাডার অফিসার। ২০১২ সালে চেন্নাইয়ে সিবিআই সুব্বিয়াহর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে, তাঁর বিরুদ্ধে ৮ কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ছিল, তখন তিনি ভিও চিদাম্বরানার বন্দর, যা আগে তুতিকোরিন বন্দর নাম পরিচিত ছিল, তার চেয়ারম্যান পদে কর্মরত ছিলেন। এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে সিবিআই সদর দপ্তরে। কেস নং RCMA1/ 2012/ A/ 0055, তুতিকোরিন পোর্ট ট্রাস্টের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে একটি কেলেঙ্কারির মাস্টারমাইন্ড হিসেবে তিনি দুর্নীতি করেছেন এই অভিযোগে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিচারের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। ফলস্বরূপ, অতিরিক্ত মুখ্য সচিব পদে তাঁর পদোন্নতি আটকে দেওয়া হয়েছিল, তাঁর পেনশন পর্যন্ত আটকে রাখা হয়েছিল।”
শুভেন্দুর দাবি, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মী ও প্রশাসনিক সংস্কার বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না চাইলে এ. সুব্বিয়ার পক্ষে সম্ভবই হতো না ডব্লু বিই সি এস সি-র এমডি হিসেবে নিযুক্ত হওয়া, কারণ তিনি একজন কলঙ্কিত এবং চার্জশিটযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক, যাঁর পেনশন আটকে রাখা হয়েছে এবং যাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি করার অপরাধে বিচার চলছে। যদি মুখ্যমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে না চাইতেন তাহলে এই নিয়োগ সম্ভব হতো না।”
এদিকে সুকান্ত মজুমদার তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে জ্যোতিপ্রিয়র গ্রেফতারি প্রসঙ্গে লিখেছেন, “রেশন কেলেঙ্কারির মূল হোতা অবশেষে ধরা পড়েছে… সত্য সর্বদাই জয়ী হবে…” তার পর ওই পোস্টে জ্যোতিপ্রিয়র একটি ছবি দিয়ে তার উপর লিখেছেন, “কান এলো, এবার আসবে মাথা।”
গ্রেফতারির পর জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।’’ তিনি বিজেপি ও শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এই চক্রান্তের অভিযোগ করেন। এদিকে জ্যোতিপ্রিয়র এই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজনের প্রশ্ন, ‘‘তবে কি যিনি ওঁকে মন্ত্রী করেছিলেন, তিনিই ষড়যন্ত্র করেছিলেন?’’
এদিকে এই প্রসঙ্গে কোনও প্রতিক্রিয়া তৃণমূলের তরফে পাওয়া যায়নি। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার জ্যোতিপ্রিয়র বাড়িতে ইডির তল্লাশি চলার সময় সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন,”রাজনৈতিকভাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে বিজেপি ব্যবহার করা হচ্ছে।”
❤ Support Us