শিবভোলার দেশ শিবখোলা
শিবখোলা পৌঁছলে শিলিগুড়ির অত কাছের কোন জায়গা বলে মনে হয় না।যেন অন্তবিহীন দূরত্ব পেরিয়ে একান্ত রেহাই পাবার পরিসর মিলে গেছে।
বাঙালির সবচেয়ে বড়ো শোকাবৃত ঘটনার নাম দেশভাগ— বলেছিলেন, ঐতিহাসিক নীহাররঞ্জন রায়। বলা বাহুল্য, এরই পরিণামে, রাষ্ট্রের ভাষাগত জবরদস্তি ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শানিয়ে ৫২, ৬১, ৭২ এবং ৮৬ সালে, ক্রমাগত আত্মদানের ভেতর দিয়ে সে তৈরি করছে তার মহান ঐতিহ্য, উঁচিয়ে ধরেছে আত্মপরিচয়ের মহিমা। বাংলাদেশের অভ্যুত্থান আর সরকারি প্রতিষ্ঠানে মাতৃভাষার একধরনের প্রতিষ্ঠার পর, একুশের শহিদদের আমরা যথাসম্ভব, অন্তত আনুষ্ঠানিক ভাবে স্মরণ করি, কিন্তু উনিশে মে, কিংবা ৭২-এর সতেরো আগস্ট, কিংবা ৮৬-এর একুশে জুলাইকে সজ্ঞান অবহেলায় বিভাজনের নির্বোধ রাজনীতি গুলিয়ে দিয়ে ভুলিয়ে দিতে চাইছে। আমাদেরও মনে পড়ে না যে, ভাষার জন্য বিশ্বের একমাত্র এবং প্রথম মহিলা শহিদ কমলা একজন বাঙালি বীরাঙ্গনা। কোথাও ঘুণাক্ষরেও উল্লেখ করি না যে, রাষ্ট্রবিধাতার ক্ষমতামত্ততার সামনে, একই সঙ্গে , একই দিনে, বর্ণমালার পতাকা আঁকড়ে ধরে শিলচরে আত্মাহুতি দিয়েছিলেন আরো ১০ ভাষা সৈনিক। ইতিহাসে, মাতৃভাষার জন্য এত বড়ো আত্মবিসর্জন আর কোথাও, কখনো ঘটেনি।
এই ত্যাগ, এই বিরল সংগ্রাম একপেশে ভাষানীতিকে নগ্ন করে দিয়েছিল সেদিন। আজও মহান উনিশ রাষ্ট্রের বিদ্রুপের সম্মুখীন। রাষ্ট্র তার ভুল শোধরায়নি, এখনো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষাকে মেনে নেয়নি। উনিশের যথাযথ ইতিহাস তৈরি হলে, তার লড়াইয়ের বৃত্তান্ত প্রচারিত হলে, দানবীয় কুৎসিতকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানানোর সংহত সুযোগ তৈরি হতে পারত। একুশে ফেব্রুয়ারি যেমন, তেমনি অমর উনিশও যে কোনো লড়াকু জাতিসত্তারই ঐতিহ্য, যেকোনো জনগোষ্ঠীর নিরস্ত্র সংগ্রামের প্রেরণা। এর ইতিহাসের ধারাবাহিকতার নির্মাণ দরকার। জরুরি তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ। সীমিত সামর্থ্য ও সমস্ত সঞ্চয় উজাড় করে দিয়ে করিমগঞ্জের একজন চিকিৎসক, একজন কবি দিলীপ কান্তি লস্কর বেনজির নিষ্ঠা ও একক প্রচেষ্টায় উনিশের ইতিহাসের প্রাথমিক তথ্য ও বহুমুখী প্রতিক্রিয়া সংকলিত করেছেন। দিলীপের আগ্রহ আর তথ্য-সঞ্চয় বিস্ময়কর। এটি উনিশের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস নির্মাণের একটি নিখুঁত খসড়া। এর ভিত্তিতে, প্রাথমিক সূত্রের অবলম্বনে গড়ে উঠুক বরাক উপত্যকার ভাষা সংগ্রামের সুপরিকল্পিত, বিস্তৃত ইতিহাস।
সৈয়দ মুজতবা আলিকে রাষ্ট্র সুনজরে দেখেনি। তাঁর মতো সমুজ্জ্বল প্রতিভা যে কোনো ক্ষমতামত্তের সামনে অপ্রতিরোধ্য চ্যালেঞ্জ। একুশের ভাষা আন্দোলনের পর, তাঁকে অবাঞ্ছিত ভাবল পাকিস্তান। ভারত একসময়ে বিদেশি চর সন্দেহে তাঁর চারপাশে গড়তে চাইল অপবাদের অবরোধ। জীবদ্দশায় বাংলাদেশ তাঁকে যথার্থ সম্মান দেয়নি। মেলেনি তাঁর বহুমুখী প্রজ্ঞার উপযুক্ত স্বীকৃতি। আমরা স্মরণ করছি, উনিশের অভ্যুত্থানে ধন্য হয়েছে যে ভূখণ্ড, তারই মাটিতে (করিমগঞ্জ) মুজতবা আলির জন্ম, আর এ মাটি ছুঁয়েই স্বপ্নময় হয়ে ওঠে রসিক পুরুষের শৈশব। বরাকের ভাষা আন্দোলনের পর, প্রগাঢ় বেদনা নিয়ে আলি সাহেব লিখেছিলেন, ভাগ্যহত কাছাড়, অবিস্মরণীয় প্রবন্ধ। সেলাম আলি সাহেব।
শিবখোলা পৌঁছলে শিলিগুড়ির অত কাছের কোন জায়গা বলে মনে হয় না।যেন অন্তবিহীন দূরত্ব পেরিয়ে একান্ত রেহাই পাবার পরিসর মিলে গেছে।
সৌরেনির উঁচু শিখর থেকে এক দিকে কার্শিয়াং আর উত্তরবঙ্গের সমতল দেখা যায়। অন্য প্রান্তে মাথা তুলে থাকে নেপালের শৈলমালা, বিশেষ করে অন্তুদারার পরিচিত চূড়া দেখা যায়।
মিরিক নামটি এসেছে লেপচা ভাষার “মির-ইওক” শব্দ থেকে, যার অর্থ আগুনে পুড়ে যাওয়া জায়গা।
15:34